প্রথমার্ধটা ছিল গোলশূন্য। তাতে আশায় বুক বেধেছিল বাংলাদেশ। অন্তত ড্র করে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আরও একটি পয়েন্ট পাওয়ার আশা ছিল সবার। কিন্তু সেটাও সম্ভব হলো। সুনীল ছেত্রীর জোড়া গোলে ভারতের কাছে দুই গোলে হেরে গেছেন জামাল ভূঁইয়ারা।
ম্যাচের শুরুতে অনেক আশা জাগিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি জামাল ভূঁইয়াদের। ৭৮ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য ছিল খেলা। শেষ ১৬ মিনিটে দুই গোল হজম করে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। দুইটি গোলের পেছনেই ডিফেন্ডারদের ব্যর্থতার পাশাপাশি ভারতীয় অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর দারুণ নৈপুণ্যের ছাপ রয়েছে।
সুনীল ছেত্রী বাংলাদেশের হন্তারক হিসেবে আগে থেকেই পরিচিত। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। ২০১৩ সালে কাঠমান্ডু সাফে ছেত্রীর ইনজুরি মিনিটের গোলে বাংলাদেশ জেতা ম্যাচ ড্র করে মাঠ ছাড়ে। পরের বছর গোয়ায় প্রীতি ম্যাচেও তার গোলে জয় বঞ্চিত বাংলাদেশ। সাত বছর পর এবার নিজেই জেতালেন দলকে।
সুনীল ছেত্রী দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা ফুটবলার সেটা আবার প্রমাণ করেছেন। সারা ম্যাচে তেমন উজ্জ্বল ছিলেন না তিনি। কিন্তু যে দুইটি সুযোগ পেয়েছেন এর পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছেন ৩৫ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ৭৯ মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে আসা ক্রস সুন্দরভাবে হেডে বল জালে পাঠান।
বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা তাকে মার্ক করতে পারেননি। নব্বই মিনিট শেষে ইনজুরি সময়েও আনমার্কড ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। ঠাণ্ডা মাথায় ডিফেন্ডারদের মাঝ দিয়ে আড়াআড়ি শটে গোল করেন। দ্বিতীয় গোলে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর কোনো ভুল না থাকলেও প্রথমটির ক্ষেত্রে কিছুটা দায় পড়ে তার উপরও।
রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলা বাংলাদেশ ভারতের রক্ষণব্যুহ সেভাবে ভাঙতে পারেনি। বল পজেশন ও মাঝমাঠের দখল বরাবরই বেশি ছিল ভারতের। বাংলাদেশ প্রথমার্ধ জমাট রক্ষণ করলেও দ্বিতীয়ার্ধে আর পারেনি।
আগের ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের পর ফুটবলার বদলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সমতা পেয়েছিলেন জেমি ডে। কিন্ত এই ম্যাচে সেটা সফল হয়নি। উল্টো ভারতীয় কোচ মিডফিল্ডার আশিক কুরনাইনকে বদলি করে সফল হয়েছেন। তার ক্রসেই ছেত্রী হেড করে গোল করেন।
বাংলাদেশ এই ম্যাচে খানিকটা আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেললেও শেষ পর্যন্ত রক্ষণের ভুল ও ছেত্রীর অভিজ্ঞতার কাছেই হেরেছে। ছেত্রীর দুই গোলে সাত ম্যাচ শেষে ভারতের পয়েন্ট পাঁচ। অন্যদিকে বাংলাদেশের পয়েন্ট মাত্র দুই। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ১৫ জুন ওমানের বিরুদ্ধে।
সেই ম্যাচে খুব বড় অঘটন না ঘটলে বাংলাদেশের পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে এশিয়ান কাপের বাছাই খেলার জন্য প্লে অফই খেলতে হবে জামাল ভূঁইয়াদের।