‘বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর, আউশের ক্ষেত জলে ভরভর, কালি-মাখা মেঘে ও পারে আঁধার ঘনিছে দেখ চাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আষাঢ়’ কবিতায় এইভাবে বর্ষার বর্ণনা দিয়েছেন। সময়ের পরিক্রমায় বাংলা বর্ষপঞ্জির হিসেবে আজ পহেলা আষাঢ়। বর্ষার প্রথম দিন। ষড়ঋতুর এ দেশে আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস ঘিরেই নিয়ে বর্ষা ঋতু। গ্রীষ্মের তাপদাহ থেকে তপ্ত প্রকৃতিকে স্নিগ্ধতার ছোঁয়া এনে দেয় বর্ষা। বর্ষার তার অবিরাম ধারার রূপ এই আষাঢ়-শ্রাবণেই মেলে ধরে।
গ্রীষ্মের খরতাপে অতিষ্ঠ প্রাণকে শীতলতা দানে জুড়ি নেই বর্ষাকালের।
বর্ষা যেমন বাঙালির জীবনে আশির্বাদ বয়ে আনে তেমনি অতিবৃষ্টিতে দুঃখের কারণও হয়ে ওঠে। বর্ষার অকৃত্রিম দান কৃষকের সেচের খরচ বাঁচিয়ে দেয়। তবে অতিবৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন জায়গা পানিতে তলিয়ে যায়। কখনো দেখা দেয় দীর্ঘমেয়াদী বন্যায়। শহুরে জীবনে শ্রমিক শ্রেণীর জীবনে বর্ষা নিয়ে আসে বর্ণনাতীত দুর্ভোগের। আর ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরে এই বর্ষায় জলাবদ্ধতা যেন নিয়তির লিখন। মাঝারি বৃষ্টি উঠলেই উঠে যায় হাটু পানি।
তবে গ্রীষ্মের দাবদাহ শেষে আষাঢ়ে বৃষ্টির ছোঁয়ায় বাংলার প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পায়। নতুন আনন্দে জেগে উঠে প্রাণ প্রকৃতি। গ্রীষ্মের রুদ্র প্রকৃতির গ্লানি আর জরাকে ধুয়ে মুছে প্রশান্তি স্নিগ্ধতা আর সবুজে ভরে তোলে বর্ষা।
জয়নিউজ/পিডি