নারায়ণগঞ্জে পৃথক দুটি ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালিয়েছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
রোববার (১১ জুলাই) রাতভর এই অভিযানে বোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রায় ১০ ঘণ্টব্যাপী দুটি অভিযানের ঘটনায় গ্রেফতার দুইজন হলেন ডেভিল কিলার ওরফে আবদুল্লাহ আল মামুন এবং মেজর ওসামা ওরফে নাঈম নামের দুজনকে।
দুজনই নব্য জেএমবির বোমা বানানোর কাজে বিশেষ পারদর্শী বলে জানিয়েছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে তারা মসজিদে মোয়াজ্জিন ও ইমামতির চাকরির আড়ালে জঙ্গি তৎপরতার কাজ চালিয়ে আসছে।
আড়াইহাজার উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের সিটিটিসি বাড়ির ভেতরে অভিযান শুরু করে। অভিযান শুরুর পর রাত পৌনে ১১টার দিকে নিরাপত্তাবেষ্টনীর বাইরে থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। এরপর ১১টা ১০ মিনিটের মধ্যে আরও দুটি বিস্ফেরণের শব্দ পাওয়া যায়। সেখানে তিনটি শক্তিশালী বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়। সেই শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে উঠে। সেখান থেকে উদ্ধার হয় বোমা তৈরর বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
অভিযান শেষে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বাড়ির ভেতর তিনটি বোমা (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছে বোমা ডিস্পোজাল ইউনিট।
তিনি আরও জানান, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি পাঁচগাঁও গ্রামের ওই বাড়িটির পার্শ্ববর্তী মসজিদের মোয়াজ্জিন ছিলেন। নব্য জেএমবির সদস্য মামুনকে গ্রেপ্তারের পর সে বোমা ও বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম মজুত থাকা এই বাড়ির সন্ধান দেন। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে আড়াইহাজারে মিয়া বাড়ি মসজদের পাশে অবস্থিত তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। এই মামুন গত ১৭ মে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডে পুলিশ বক্সের সামনে আইইডি বোমা রেখেছিল। যে মোটরসাইকেলে বোমাটি সেখানে রেখেছিল সেটিও জব্দ করা হয়েছে বলে জানান সিটিটিসির প্রধান। মূলত সেই বোমা উদ্ধারের সূত্র ধরেই এই দুটি অভিযান চালানো হয়েছে।
আড়াইহাজারে অভিযানের পর বন্দর ধামঘর কাজীপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে আরও কিছু বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানান, বন্দরের কাজীপাড়ার বাড়িটিতে মো. নাঈম নামে এক মসজিদের ইমাম বসবাস করতেন। সাংগঠনিকভাবে তিনি মেজর ওসামা নামে পরিচিত। নাঈম নব্য জেএমবির সামরিক সদস্য এবং বোমা তৈরির প্রশিক্ষক।
অভিযান শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বোমা তৈরির এসব সরঞ্জাম উদ্ধার করেন।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের দুটি অভিযানে সহায়তা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।
জয়নিউজ/পিডি