নারীদের হত্যার পর তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রি করতো এক মেক্সিকান দম্পতি। গ্রেফতারের পর এই ঘাতক দম্পতি হুয়ান কার্লোস এবং তার সঙ্গী প্যাট্রিসিয়া ২০জন নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে।
হত্যার আগে কোনো কোনো নারীকে তারা যৌন নির্যাতনও করেছে। শরীরের অঙ্গ বিক্রির পাশাপাশি তাদের জিনিসপত্র বিক্রি করে দিত তারা।
গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন মেক্সিকোর স্থানীয় বাসিন্দা ন্যান্সি হুইট্রন এবং তার দুই মাস বয়সী সন্তান ভ্যালেন্টিনা। দুই সন্তানকে স্কুলে দিয়ে আসার পর থেকে ন্যান্সি আর তার ছোট সন্তানের খোঁজ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন প্রতিবেশীরা।
প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানান, ঘাতক দম্পতিকে একটি বাচ্চা বহনের ট্রলি ঠেলে নিয়ে যেতে দেখেছেন তারা। পুলিশ তাদের থামিয়ে সেটি তল্লাশি করে এর ভেতরে মানুষের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পান।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ন্যান্সি হুইট্রনকে হত্যার কথা স্বীকার করে খুনি হুয়ান কার্লোস। সে আরো বলে, ২৩ বছরের অর্লেট অলগুইন এবং ২৯ বছরের ইভলিন রোহাসকেও তারা দুজনে মিলে হত্যা করেছে। খুন হওয়া এই নারীদের তিনজনই ছিলেন সিংগেল মাদার বা একক মা। গত কয়েকমাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন তারা।
ন্যান্সির শিশু ভ্যালেন্টিনাকে বিক্রি করে দিয়েছিল খুনি দম্পতি। তাকে উদ্ধার করে তার নানীর কাছে রেখেছে পুলিশ।
ঘাতক দম্পতির ফ্ল্যাট এবং কাছাকাছি একটি জায়গায় মানব শরীরের টুকরো খুঁজে পান তদন্তকারীরা। এসব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ একটি বালতি এবং ফ্রিজে রাখা ছিল। কিন্তু কাদের কাছে এসব মানব অঙ্গ বিক্রি করা হতো, তা এখনো জানা যায়নি।
হত্যার শিকার নারীরা তাদের কাছ থেকে পোশাক এবং খাবার কিনতেন। ভালো কাপড় রয়েছে এমন তথ্য দিয়ে এই নারীদের একটি জায়গায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করতো কার্লোস ও প্যাট্রিসিয়া।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারের পর পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে গোসল করতে দেওয়ার অনুরোধ করে হুয়ান কার্লোস, যেন সে একটি স্যুট পড়ে মিডিয়ার সামনে আসতে পারে। তার দাবি সে ‘কোনো নোংরা অপরাধী নয়’!
মেক্সিকোতে নারী হত্যা নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। মেক্সিকো স্টেটে দেশটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি নারীদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৩৯৫ জন মানুষ নিখোঁজ হয়েছে, যাদের মধ্যে ২০৭ জনই নারী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ঘটনাগুলোর কোন সমাধান বা বিচার হয়নি।- বিবিসি
জয়নিউজ