শুরুতে ঝড় তুললেন সৌম্য সরকার। চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে ফিফটি তুলে নেন তিনি। পরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শামীম পাটোয়ারী ঝড়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে এত রান তাড়া করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জেতেনি বাংলাদেশ।
রোববার (২৫ জুলাই) শুরুতে বোলারদের উদারতায় জিম্বাবুয়ে ১৯৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ায় ম্যাচটা যে জমজমাট হতে যাচ্ছে সেটি টের পাওয়া যাচ্ছিল। হলোও তাই। ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৪ বল হাতে রেখে।
অবশ্য দুই ওপেনারে শুরুটা খারাপ ছিল না। সৌম্য সরকার কিছুটা মেরে খেলার চেষ্টায় ছিলেন। তৃতীয় ওভারে মুজারাবানির বলে নাঈম হাত খুলতে গিয়ে তালুবন্দি হন মিডঅফে। ৭ বলে নাঈম ফেরেন ৩ রান করে। এর পর সৌম্য-সাকিব মিলে পাওয়ার প্লেতে রানের চাকা সচল রেখেছেন।
সাকিব মেরে খেলতে থাকেন বেশ কিছুক্ষণ। এই মেরে খেলতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন অষ্টম ওভারে। এই ওভারে লুক জংউইর বলে দুটি ছক্কা মারলেও চতুর্থ বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন বদলি ফিল্ডার মুসাকান্দাকে। সাকিবের ১৩ বলের ইনিংসে ছিল ১টি চার ও দুটি ছয়।
প্রয়োজনের এই সময় সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ মিলেই এগিয়ে নেন দলকে। সৌম্য ফিফটি তুলে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে পৌঁছানোর পর ভেঙে যায় ৬৩ রানের এই জুটি। যেটি গড়ে দেয় জয়ের ভিত। ম্যাচসেরা ইনিংস খেলা সৌম্য ৬৮ রানে ফেরেন। তার ৪৯ বলের ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও ১টি ছয়।
আফিফ নামার পর স্কোরবোর্ড দ্রুত সমৃদ্ধ করতে সচেষ্ট ছিলেন। ৫ বলে ১৪ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন মাসাকাদজার স্পিনে। তাতে ভীষণ চাপেই পড়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। বিশেষ করে চাপ ছিল রানরেটের। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেছেন মূলত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও শামীম।
দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে মাহমুদউল্লাহ ২৮ বলে ফিরে যান ৩৪ রানে। এই ঘুরে দাঁড়ানো পরিস্থিতিতে শামীমের অবদানও কম নয়। ১৫ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন বাংলাদেশ। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চারের মার।
জিম্বাবুয়ের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মুজারাবানি ও জংউই। এর আগে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বোলিংয়ের ওপর ছঁড়ি ঘোরায় জিম্বাবুয়ে। টস জিতে ব্যাট করে ৫ উইকেটে তারা সংগ্রহ করে ১৯৩! হারারেতে এই বড় স্কোরের পেছনে তিনজনের বড় অবদান! তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ ও সাইফউদ্দিন। উদার হস্তে চার ওভারে রান দেওয়াতেই ফুলে-ফুঁপে উঠে স্বাগতিকদের সংগ্রহ। সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল ছিলেন সাইফউদ্দিন। এদের মাঝে তাসকিনের চতুর্থ ওভারে আসে ৩০ রান।
এর পর ১১তম ওভারে নাসুমের ওভারে ২১ ও সাইফের ১৮তম ও ২০তম ওভারে উঠেছে ১৯ ও ১৬ রান! টি-টোয়েন্টিতে এমন কয়েকটি ওভারই জয়ের পুঁজি পেতে যথেষ্ট। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। তবে সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী রেজিস চাকাভা ও ওয়েসলে মেধেভেরেকে ফিরিয়ে রাশ টেনে ধরার সুযোগ ছিল সফরকারীদের। কিন্তু বোলিং ব্যর্থতায় সেটি সম্ভব হয়নি। মেধেভেরের ৫৪, চাকাভার ৪৮ ও শেষ দিকে রায়ান বার্লের ঝড়ো গতির ৩১ রান বড় পুঁজি পেতে ভূমিকা রাখে জিম্বাবুয়ের।
সবচেয়ে বেশি ব্যয়বহুল সাইফ ৪ ওভারে ১ উইকেটের বিনিময়ে দিয়েছেন ৫০ রান। সৌম্য ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ২টি উইকেট। শরিফুল ২৭ রানে একটি ও সাকিব ২৪ রানে নিয়েছেন সমসংখ্যক উইকেট। ম্যাচসেরার সঙ্গে সিরিজ সেরাও হয়েছেন সৌম্য সরকার।