চট্টগ্রামে নারীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস!

চট্টগ্রামে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে এক নারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়া ষাটোর্ধ্ব ওই নারী গত চারদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার উপসর্গগুলো দেখে চিকিৎসকরা তাকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগী হিসেবে ধারণা করছেন।

- Advertisement -

তারা বলছেন, এখনও এই সন্দেহটি নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয়। ওই নারী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কি-না, সেটি নিশ্চিত হতে আরও ৩ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

- Advertisement -google news follower

তবে ওই নারীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্তের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত না করলেও রোগীর চিকিৎসায় যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে তা একমাত্র ব্ল্যাক ফাঙ্গাস আক্রান্ত রোগীকেই দেওয়া হয়। এদিকে চিকিৎসকরা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার না করলেও রোগীর ছেলে তা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বলে জানিয়েছেন।

জানা যায়, গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন ষাটোর্ধ্ব গৃহিনী ফেরদৌস বেগম। চলতি মাসের ৩ তারিখ তিনি কোভিড টেস্টে পজিটিভ হন। ১৫ জুলাই কোভিড নেগেটিভ হলেও উনার নানা শারিরীক অসুবিধা দেখা দেয়। পরে স্বজনরা তাঁকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এই রোগীর শরীর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছে ধারণা করছেন।

- Advertisement -islamibank

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা সুযত পাল বলেন, রোগীর অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি ‘মিউকরমাইকোসিস’ রোগে আক্রান্ত। এটি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কি-না, তা এখনো নিশ্চিত নই। রিপোর্ট আসলে বলা যাবে।

এই নারীর চিকিৎসায় এমপোটেরিসিন-বি ইনজেকশন প্রতিদিন ৫ ভায়াল করে মোট ১৪ দিন প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। মাকে বাঁচাতে ব্যয়বহুল এই ওষুধ এখন হন্যে হয়ে খুঁজছেন সন্তানরা। কিন্তু তা এখনও পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত এই নারীর স্বামী পাঁচদিন আগে করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন।

রোগীর ছেলে মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ‘পাঁচদিন আগে আমি আব্বাকে হারিয়েছি। এখন আমার মা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার জন্য এমপোটেরিসিন-বি ইনজেকশনটি খুঁজছি। কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। প্লিজ আপনারা এই ওষুধের সন্ধান দিন। যত টাকা লাগে আমরা দিব। আমার মাকে বাঁচাতে চাই।’

বিরল এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই হাতেগোনা। তাই সরকারিভাবে আপাতত এই পরামর্শ মতো ইনজেকশন যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তবে রোগী বাড়লে সরকারি নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা.সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘এই রোগে যে ইনজেকশন প্রয়োজন তা এখনও দেশে নেই। ঢাকায় এক রোগীকে যে ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়েছিল তা কার্যকর প্রমাণিত হয়নি।’

চিকিৎসকরা বলছেন, খুব কাছাকাছি দীর্ঘ সময় ধরে সংস্পর্শে না গেলে এই রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কম। মূলত কোভিড আক্রান্তদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি। তবে শুরু থেকেই এই রোগে চিকিৎসা করা জরুরি।

চমেক হাসপাতলের মেডিসিন বিভাগ সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. আমির হোসাইন বলেন, ‘এটা খুব দুর্লভ একটা রোগ। সাধারণ এই রোগের চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। তবে এই রোগ কারো শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আক্রান্ত হবার কথা না। তবে যদি কেউ ক্লোজ কন্টাক্টে থাকে তাহলে তিনিও আক্রান্ত হতে পারে।’

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM