টাইগারদের বোলিংয়ের সামনে টিকতেই পারলো না অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে (৬২) অলআউট হলো অজিরা। এতে করে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়ার আগের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটি ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৫ সালে সাউদাম্পটনে। সেবার ৭৯ রান করতে পেরেছিল তারা। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব মিলিয়ে এটি ১৭তম সর্বনিম্ন রানের স্কোর।
এছাড়া এদিন ১৩.৪ ওভারে অলআউট হওয়াও অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ছোট ইনিংস। এর আগে ১৫ মার্চ ১৮৭৭ সালে এর চেয়েও কম ওভারে শেষ হয়েছিল তাদের ইনিংস।
সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে বাজে বল করা সাকিব আল হাসান এদিন ফিরেছেন রাজার মতো। ৩.৪ ওভার বল করে মাত্র ৯ রান খরচ করে একটি মেডেনসহ ৪টি উইকেট তুলে নেন। তিনি। ফলে ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরার পুরস্কারও তিনি হাতে তোলেন। দাপট দেখিয়েছেন এই সিরিজেই প্রথম ম্যাচে নামা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৩ ওভারে ১২ রান দিয়ে এই পেসার নিয়েছেন ৩ উইকেট।
সোমবার (৯ আগস্ট) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের পঞ্চম ও শেষটিতে প্রথমে ব্যাট করা বাংলাদেশ ১২২ রানে থামে। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে এই সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। পরে লক্ষ্যে নেমে ১৩.৪ ওভারে ৬২ রানে শেষ হয় অজিদের ইনিংস।
অজিদের ইনিংসে প্রথম দুটি উইকেট তুলে নেন নাসুম আহমেদ। দলীয় দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারে প্রথম বলেই ভয়ঙ্কর ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানকে বোল্ড করেন। পরে নিজের দ্বিতীয় ওভারেও সফল হন এই বাঁহাতি। অজিদের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শকে এলবির ফাঁদে ফেলেন।
দলীয় ১১তম ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে অ্যালেক্স ক্যারি ও মইসেস হেনরিকেসকে বিদায় করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এরপরের ওভারেই অ্যাশটন টার্নারকে বিদায় করে নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১০০তম উইকেট লাভ করেন সাকিব আল হাসান। এছাড়া প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১ হাজার রান ও ১০০ উইকেট পেলেন সাকিব। নিজের ৮৪তম ম্যাচে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। বর্তমানে ১০২টি উইকেট হলো সাকিবের। ১০৭ উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টি শীর্ষ উইকেট শিকারি শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের শুরুটা দারুণ করে। ৪.৩ ওভারে উদ্বোধনী জুটিতে ৪২ রান তোলে স্বাগতিকরা। যদিও এ ম্যাচে ওপেনিংয়ে নামানো হয়নি সৌম্য সরকারকে। দুই ওপেনার হিসেবে মাঠে নামে মোহাম্মদ নাঈম ও মাহেদী হাসান।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে অ্যাশটন টার্নারকে তুলে মারতে গিয়ে অ্যাশটন অ্যাগারকে ক্যাচ দেন মাহেদী। ১২ বলে ১৩ রান করেন তিনি। নবম ওভারে বিদায় নেন নাঈম। ২৩ রান করা এই বাঁহাতিকে মাঠ ছাড়া করান ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান।
মাঠে এসে সুবিধা করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। জাম্পার বলে এলবি হওয়ার আগে ১১ রান করতে পেরেছেন তিনি।
স্বাচ্ছন্দে ব্যাট করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভালো খেলেও বাজে এক ডিফেন্স করতে গিয়ে আউট হয়ে যান। অ্যাগারের বল বুঝতে না পেরে ওপরে উঠে যায়। ক্যাচ নেন সেই অ্যাগারই। ১৪ বলে ১৯ রান করেন তিনি। আগের চার ম্যাচে ব্যর্থ সৌম্য এদিন খোলশ ছেড়ে বের হন। তবে ক্রিস্টিয়ানের বলে তুলে মারতে গিয়ে বিদায় নেন ১৬ রানে।
১৩ বলে ৮ রান করা নুরুল হাসান সোহান নাথান এলিসের বলে ইনসাইডেজ বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন। আর শেষ ওভারে সুইপ করতে গিয়ে এলিসের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন আফিফ হোসেন। ১০ রান আসে এই তরুণের ব্যাট থেকে। শেষ ওভারেই কোনো বল মোকাবিলা না করে রান আউট হন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৮ বলে ৪ রান করে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক হোসেন।