স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নতুন শিক্ষক নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় শিক্ষার্থীদেরও ডোপ টেস্ট করা হবে। একইসঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতি বছর একবার করে ডোপ টেস্টের আওতায় আসবেন। যারা পজিটিভ হবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বিকালে সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন নতুন ভয়ংকর মাদক আসার খবর আসছে আমাদের কাছে। বিভিন্নভাবে যেসব সংবাদ আমরা পাচ্ছিলাম, সেজন্য আমরা হঠাৎ করে কেবিনেট সেক্রেটারির মাধ্যমে আজকের সভা আহ্বান করেছি। সামারিক বাহিনীর প্রতিনিধিসহ সকল বাহিনীর প্রধানরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাদক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি, কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর উৎস কী, ভুক্তভোগী কারা হচ্ছেন। আমরা দেখছি, আমাদের দেশে যে মাদকগুলো উদ্ধার করি, সেগুলো বাইরের। আমরা মাদক তৈরি করি না। মাদক বাইরে থেকে আসে। এর মাধ্যমে আমাদের ইয়ং জেনারেশন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের এই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্যই আমরা দীর্ঘ আলোচনা করেছি। মাদক কীভাবে আসে সেগুলোও আমরা লক্ষ্য করছি।
সম্প্রতি আমরা দেখেছি, কয়েকটা ভয়ংকর মাদক কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আসছে। সেজন্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে যাতে না আসে, সেটা বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। কুরিয়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করেন আমাদের ডাক বিভাগ। তাদেরকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা স্ক্যানার বসিয়ে প্রত্যেকটা কুরিয়ার সার্ভিসের মালপত্র স্ক্যান করবে। যারা এই নির্দেশ না মানবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কেবিনেট সচিব। সেটা আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা ডোপ ডেস্টের ব্যবস্থা নিয়েছি এই মাদককে নিরুৎসাহিত করতে। চাকরিতে ঢোকার সময় ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। অনেক ধরনের সমস্যা আসছে। এটাও কেবিনেট সচিব সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেবেন। বছরে একবার সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীরা ডোপ টেস্টের আওতায় আসবেন। যারা ডোপ টেস্টে পজিটিভ হবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এই ডোপ টেস্টের আওতায় থাকবে। ইউনিভার্সিটির ছাত্র যারা ভর্তি হবেন এবং যারা নতুন শিক্ষক নিয়োগ হবেন, তাদের সবাই ডোপ টেস্টের আওতায় আসবেন। এটা নিয়েও আলোচনা করেছি। কেবিনেট সচিব এটাও সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেবেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আফগানিস্তান থেকে আমাদের দূরত্ব প্রায় এক হাজার মাইল। মাঝখানে আরও দু’টা দেশ রয়েছে। কাজেই ওখান থেকে এখানে কেউ চলে আসবে, আপনাদের এ ধরনের চিন্তাধারা আমার কাছে অমূলক মনে হয়। আপনারা মনে করেছেন, আমাদের দেশের মানুষ সেখানে গিয়েছেন। আমাদের দেশের মানুষ কখন্র জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়নি। পছন্দও করে না। কাজেই ওখানে কী হচ্ছে সেটা তাদের ব্যাপার। আমাদের দেশে কী হবে সেটা আমাদের সরকার আছে।’