করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা; এই মাস্ক যে করোনা সংক্রমণ রোধে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে তা এবার হাতে কলমে প্রমাণ করলেন একদল বিজ্ঞানী।
বাংলাদেশে পরিচালিত একটি গবেষণায় সম্প্রতি জানা গেছে, যেসব এলাকার লোকজন নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করেন, সেসব এলাকায় করোনা সংক্রমণ প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ৬০০টি গ্রামের ৩ লাখ ৪২ হাজার ১২৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এ বিষয়ক একটি তাৎক্ষনিক (র্যান্ডোমাইজ) গবেষণা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল, স্ট্যানফোর্ড এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিশেষজ্ঞ। করোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে এ পর্যন্ত যতগুলো তাৎক্ষনিক গবেষণা পরিচালিত হয়েছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় আকারের গবেষণা।
এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লরা কোয়ং, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ আহমেদ মুশফিক মোবারক এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্টিভ লবি ও অ্যাশলে স্কিজেনস্কি গত বছরের নভেম্বর থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে এই গবেষণা কাজ করেছেন। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশভিত্তিক অলাভজনক এনজিও গ্রিন ভয়েস।
গবেষণায় এই ৬০০ গ্রামের ৩ লাখ ৪২ হাজার ১২৬ জন মানুষের ৩০ শতাংশকে নিয়মিত মাস্ক পরার আহ্বান জনানো হয় এবং তা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থাও রাখা হয়, অন্যদিকে বাকি অর্ধেকের বেলায় মাস্ক পরার বিষয়টি শিথিল রাখা হয়।
৫ মাস পর দেখা যায়, ওই ৩০ শতাংশ মানুষ যেসব এলাকায় বসবাস করেন, সেসব স্থানে করোনার সংক্রমণ অন্যান্য এলাকার চেয়ে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ কম হয়েছে।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য আহমেদ মুশফিক মোবারক বলেন, ‘এটি খুবই নগন্য একটি সংখ্যা, কিন্তু এর ফলাফল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মহামারি প্রতিরোধে মাস্ক কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, এই ছোট্ট পরীক্ষাটি তার একটি প্রমাণ।’
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য লরা কোয়ং এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এতদিন বিজ্ঞানীরা মাস্কের গুরুত্ব সম্পর্কে বলে আসছিলেন। এখন আমাদের এই মাঠ পর্যায়ের গবেষণাতেও এটি প্রমাণিত হলো।’
এনবিসি জানিয়েছে, বুধবার এই গবেষণা বিষয়ক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ইনোভেশন ফর পোভার্টি অ্যাকশন। বর্তমানে সেই প্রতিবেদনের পিআর রিভিউ চলছে।