মিথ্যা তথ্য দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে সরকারি ঋণ আইন, ২০২১ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিন দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি সরকারি সিকিউরিটি বা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের স্বত্ব অর্জনের উদ্দেশ্যে মিথ্যা বক্তব্য দিলে অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। যে টাকা-পয়সা ডিপোজিট করবে, তা নিয়ে যদি মিথ্যা কথা বলে, তাহলে শাস্তি দেওয়া হবে।’
সচিব বলেন, ‘আমাদের সরকারি ঋণ অ্যাক্ট ছিল। বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনীয় অ্যামেন্ডমেন্ট করা হয়েছে। বাস্তব অবস্থার পরিস্থিতিতে ঋণ পদ্ধতি ও ডিপোজিট সিস্টেমও চেঞ্জ হয়েছে। তাই নতুন আইন করতে হচ্ছে। বিস্তারিত আলোচনার পর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইনের উদ্দেশ্য হলো— বাংলাদেশে সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার সংশিষ্ট দপ্তরগুলোর জন্য অধিকতর আধুনিক প্রক্রিয়ায় ঋণ সংগ্রহ, টেকসই ঋণ নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন, ঋণ কৌশলপত্র প্রস্তুত, ঋণের ঝুঁকি নিরূপণ এবং সরকারের দায় হিসাবায়নের পথ অধিকতর সম্প্রসারণ করা।
খসড়া আইনে ৪০টি ধারা আছে, জানিয়ে সচিব বলেন, ‘এর মূল বিষয় সরকারের বাজেট ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে ঘাটতি অর্থায়ন বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক গৃহীত অথবা দেশীয় বা বিদেশি মুদ্রায় গৃহীত সুদ এবং মুনাফাযুক্ত বা মুনাফামুক্ত যেকোনো প্রকারের ঋণ সংগ্রহ। সরকার যে ঋণ নেবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে, তার বিপরীতে গ্যারান্টি থাকবে যে, টাকা দিলে তা ফেরত পাওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি ঋণ অফিসগুলোর ভূমিকা ঠিক করে দেওয়া হবে, কে কী করবে। শরিয়াভিত্তিক সরকারি সিকিউরিটি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।’
বছরখানেক আগে শুকুক নামে একটি বন্ড বাংলাদেশ ব্যাংক শুরু করেছে, জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এতে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। যে আশা করা হয়েছিল, তার দ্বিগুণ সাড়া পাওয়া গেছে। সেটি হচ্ছে শরিয়াভিক্তিক। স্বাভাবিক ডিপোজিট ব্যবস্থার পাশাপাশি শরিয়াভিত্তিক ডিপোজিট ব্যবস্থার চিন্তা করা হয়েছে। শুকুকটা সার্কুলার দিয়ে করা হয়েছিল। এখন আইনের মধ্যে করা হলা। এখন শুধু বিদেশিরা করতে পারে। তবে, আগামীতে দেশেও এটা করা যায় কি না, তা চিন্তা করা হচ্ছে।’