আনন্দপূর্ণ পরিবেশে দুঃখের প্রভাব অর্থাৎ হরিষে বিষাদ হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করার সময় ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপদল বিজয় এবং সিএফসির মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই পক্ষকেই দেশীয় অস্ত্রসহ অবস্থান নিতে দেখা যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৭ জন কর্মী আহত হয়েছে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে থমথমে পরিস্থতি বিরাজ করছে। মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে উভয় পক্ষ। বুধবার (১০ অক্টোবর) দুপুর তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। বিবদমান শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের নেতৃত্বাধীন বিজয় এবং ওই কমিটির সহ-সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বাধীন সিএফসি উভয়ই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে আনন্দ মিছিল করার পর প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান নেয় বিজয়’র নেতাকর্মীরা। এসময় একই নেতার অনুসারী হয়েও কেন সিএফসিকে ডাকা হয়নি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সিএফসির নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের সামনে এবং বিজয়ের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে।
এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দেশীয় অস্ত্রসহও অবস্থান নিতে দেখা যায় তাদের। পরে পুলিশ এসে দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে মাঝখানে সতর্ক অবস্থান নেয়।
এ ঘটনায় উভয় দলের অন্তত সাত জন কর্মী আহত হয়েছে। বিজয়’র আহতরা হলেন, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রিদুয়ান ইবনে সাত্তার, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাদ্দাম, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের অর্থনীতি বিভাগের মোহাইমিনুল ও একই সেশনের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের নাসিম চৌধুরী। অন্যদিকে সিএফসি গ্রুপের আহতরা হলেন, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন বিভাগের নাসিম সিয়াম, একই শিক্ষাবর্ষের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শরীফুল ইসলাম এবং ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের সাদাফ কবির। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিজয় গ্রুপের নেতা ফজলে রাব্বি সুজন জয়নিউজকে জানান, সিএফসি যৌন নির্যাতন, সাংবাদিক মারধরের মত কর্মকাণ্ড ও জামাত শিবিরের এজেন্ট। এহেন অপরাধ কর্মকাণ্ডগুলো চাপা দিতে ক্যাম্পাস অস্থীতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত এসব অপরাধীরা। প্রশাসন যদি অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়। আমরা আইন হাতে তুলে নেব।
আর সিএফসি গ্রুপের নেতা সাবেক সহ-সভাপতি জামান নূর বলেন, গ্রেনেড হামলার রায়ের মত গুরুত্বপূর্ণ দিনে জামাত শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের কর্মীদের উপর হামলা করেছে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছে। আমরা এ হামলার নিন্দা জানাই।
সংঘর্ষের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী জানান, যারা এ অপকর্মে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।