কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখছে সরকার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইন হাতে তুলে না নিয়ে সবাইকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা-সংক্রান্ত একটি খবর সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে যে কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। সকলকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, কেউ ছাড় পাবে না। তিনি কুমিল্লার ঘটনা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাজ উল্লেখ করে বলেন, যারা হিন্দুদের মন্দিরে হামলা চালায় তারা দলীয় পরিচয়ের হলেও ছাড় দেওয়া হবে না।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর খামারবাড়িতে শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর শুভেচ্ছা প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যারা নষ্ট করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এর আগে বুধবার ভোরে কুমিল্লা নগরীর নানুয়াদীঘির উত্তর পাড় থেকে রেজাউল করিম নামে এক পথচারী জরুরি সেবার ৯৯৯-এ ফোন করে কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগ করেন। এ নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে কুমিল্লার সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ ঘটনাস্থলে এসে পূজা উদযাপন কমিটি, মুসলিম ধর্মীয় নেতাসহ স্থানীয়দের নিয়ে বৈঠক করেন। এরপর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সেখানকার পূজামণ্ডপ এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি পূজামণ্ডপের গেট ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বুধবার বিকেলে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানিয়েছেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বিষয়টি আইনিভাবে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবেশ ঘোলাটে করার চেষ্টা করবেন না।