ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলায় চার আসামির সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন বলে জানান তিনি।
যে চার আসামির সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন আল-জাজিরায় সাবেক সেনাপ্রধানকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত জুলকারনাইন ওরফে সামি, সুইডিশ প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক নেত্র নিউজ সম্পাদক তাসনীম খলিল, ব্লগার আশিক ইমরান ও ওয়াহিদুন নবী স্বপন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি সাতজন। তিন আসামি কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার মো. দিদারুল আলম ভুঁইয়া ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন জামিনে ছিলেন। এদিন তাঁরা ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর কারাগারে মারা যাওয়া লেখক মোস্তাক আহমেদকে অব্যাহতি দেন আদালত। একইদিনে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ও ফেসবুক আইডি ফিলিপ শুমাখারকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ১০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) আফছর আহমেদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন।
গত বছরের ৫ মে র্যাব-৩ সিপিসি-১ এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। এছাড়া অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা ‘আই অ্যাম বাংলাদেশি’ নামের ফেসবুক পেইজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার ও গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছেন, যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেইজের অ্যাডমিন শায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ সমাচার, স্বপন ওয়াহিদ, মোস্তাক আহম্মেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেইজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছেন।
আহমেদ কবীর কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন ওরফে সামিউল, শাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’-এর প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, ‘তাঁদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, শায়ের জুলকারনাইন, শাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।
জয়নিউজ/পিডি