ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। নগরের নিম্নাঞ্চলে জলজট সৃষ্টি হয়েছে। জনজীবন হয়ে পড়েছে স্থবির। অবিরাম বর্ষণে রাস্তায় কমে গেছে সব ধরনের যান চলাচল। শুক্রবার (১২ অক্টোবর) ছুটির দিন হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ ঘরে থাকলেও, বিপাকে পড়েছেন দিনমজুর ও শ্রমজীবিরা। পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী কয়েকজন জয়নিউজকে জানান, সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি মাঝরাতে ভারি বর্ষণে পরিণত হয়। ক’দিন ধরে কখনো ভারি, কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির পানিতে কাদায় একাকার হয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট। এতে যান চলাচল ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। রাস্তায় জন উপস্থিতি কমে গেছে।
রেয়াজুদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী মাহমুদুল ইসলাম জয়নিউজকে জানান, বৃষ্টির কারণে রাস্তায় কাদা। পানি জমে যাচ্ছে। ফলে লোকজন দোকানে কম আসছে। কেনা-বেচা কম হচ্ছে।
অটোরিকশা চালক বশির আহম্মেদ জয়নিউজকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে লোকজন না থাকায় তেমন রোজগার করতে পারিনি। তবে বৃষ্টির কারণে অটোরিকশা চালকরা ভাড়া বেশি আদায় করেছে বলে অভিযোগ অনেকের।
এদিকে জেলা প্রশাসন সতর্কাবস্থায় রয়েছে। নগরে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসরতদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমি ধসের আশঙ্কায় মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) রাত থেকে মাইকিং শুরু করে জেলা প্রশাসন। বুধবারও (১০ অক্টোবর) মাইকিংয়ের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রথমদিন নগরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী অন্তত ৬শ’ পরিবারকে সরিয়ে নেন জেলা প্রশাসনের চার সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড)।
এ প্রসঙ্গে পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান জয়নিউজকে বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়ে আমাদের উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সুযোগ নেই। সরকারি যে সব পাহাড়ে লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করছে, তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পরবর্তীতে এসব এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মেঘনাথ তঞ্চঙ্গ্যা জয়নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) থেকে শনিবার (১৩ অক্টোবর) পর্যন্ত হালকা থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। চট্টগ্রামে বেলা ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
জয়নিউজ/ পার্থ/ আরসি