বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের কাতেবীপাড়া এলাকায় যৌতুকের দাবিতে কামরুন্নাহার (২৬) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১০ অক্টোবর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
কামরুন্নাহারের ভাই আবুল কালাম আজাদ তার বোনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে স্বামী, ভাসুর, দেবর ও ননদের নাম উল্লেখ করে থানায় এজাহার করেছেন। ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে শেখেরখীল গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে শেখেরখীল ইউনিয়নের শেখেরখীল গ্রামের হাজী আলী মিয়ার কন্যা কামরুন্নাহারের সাথে ছনুয়া ইউনিয়নের কাতেবীপাড়ার মৃত আব্দুল মজিদের পুত্র মো. ইলিয়াছের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ইলিয়াছ বিভিন্ন সময় যৌতুকের বাহনায় কামরুন্নাহারকে পেটাত। এ নিয়ে সামাজিকভাবে বেশ কয়েকবার শালিসও বসে। তাদের সংসারে আরমান (৬) ও আবিদ (৩) নামের দুইটি পুত্রসন্তান আছে। এছাড়া কামরুন্নাহার ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
ইলিয়াছ কিছুদিন ধরে একটি অটোরিকশা কেনার জন্য কামরুন্নাহারের ভাই আবুল কালাম আজাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছিল। ওই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় স্বামী ইলিয়াছ বুধবার রাতে বেধড়ক পেটায় কামরুন্নাহারকে। এতে কামরুন্নাহারের মৃত্যু হয়। এ পরিস্থিতিতে স্বামী মো. ইলিয়াছ, ভাসুর মো. কালু, মো. ইদ্রিস, দেবর আমির হোসেন ও ননদ রহিমা বেগম লাশ বাড়ির সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দেয়। পরে কামরুন্নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করে।
কামরুন্নাহারের ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার বোনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার বোনের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দাগ রয়েছে। সে আত্মহত্যা করেনি। হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়। এ হত্যার বিচার চাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. হানিফ বলেন, কামরুন্নাহারের লাশ আমি খাটের উপর থেকে উদ্ধার করেছি। লাশ ঝুলন্ত ছিল না। গলায় ও শরীরে দাগ রয়েছে।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, অপমৃত্যু মামলা শেষে লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। পিএম প্রতিবেদন আসলে নিয়মিত মামলা হবে।
শেখেরখীল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইয়াসিন বলেন, কামরুন্নাহারের মৃত্যুর পর থেকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। লাশ শেখেরখীলে বাপের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
জয়নিউজ/আরসি