বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’ এ আগুনের ঘটনায় সেই লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান।
র্যাব বলছে, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর এক আত্মীয়র বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন হামজালাল।
এরআগে রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লঞ্চমালিক হামজালাল শাহের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এতে আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বরগুনা বারের সদস্য আইনজীবী ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার ঘটনার দিন লঞ্চটিতে আগুন লাগার পরে ভাসতে ভাসতে ঝালকাঠি জেলার কলাবাগান এলাকার কিনারায় পৌঁছায়। ফায়ার সার্ভিস ও ঝালকাঠি প্রশাসনের লোকজন আসিয়া কতিপয় যাত্রীদের দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করিয়া ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতালে এবং বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। প্রায় অর্ধশতাধিক মৃতদেহ উদ্ধারের পর শনাক্তকৃত কিছু লাশ স্বজনদের নিকট বুঝিয়ে দেন বাকি লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসক বরাবরে হস্তান্তর করেন।
ঘটনার সময় হতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও আসামি স্বয়ং অথবা তার কোনো প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে স্বজন হারানো অভিভাবকদের সান্ত্বনা পর্যন্ত প্রদান করেননি। আসামিপক্ষ বেপরোয়াভাবে লঞ্চ চালায়, ভাড়ার জন্য নিরাপত্তাহীন, অতিরিক্ত বোঝাইকৃত লঞ্চ জলপথে লোক বহন করে, অগ্নি বা দাহ্য বস্তু সম্পর্কে ত্রুটি রেখে, বিস্ফোরক পদার্থ ও যন্ত্রপাতি সম্পর্কে ত্রুটি রেখে অবহেলা এবং বেপরোয়া যান চালানোর মাধ্যমে শত শত যাত্রীর মৃত্যু ঘটানোর অপরাধ করেছেন। এ মৃত্যুর জন্য লঞ্চমালিক নিজে দায়ী।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’ এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। লঞ্চটি রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে লাগা আগুন মুহূর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। এনিয়ে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪২ জনে।
জয়নিউজ/পিডি