আজ ১১ অক্টোবর, ৭৭ বছরে পদার্পন করলো এই অঞ্চলের অন্যতম বৈশ্বিক সংবাদ সম্প্রচার কেন্দ্র বিবিসি বাংলা। বিশ্বের অন্যতম সেরা গণমাধ্যম বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের একটি শাখা প্রতিষ্ঠান এটি। এই নিয়ে জয়নিউজবিডি’র পাঠক-দর্শকদের জন্য রইলো বিশেষ প্রতিবেদন
শুভ জন্মদিন বিবিসি বাংলা । আজ থেকে ৭৬ বছর আগে এই দিনে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস থেকে বাংলা সম্প্রচার শুরু হয়। সময়টা ১৯৪১ সালের ১১ই অক্টোবর। প্রথমে এর অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হতো ১৫ মিনিট। নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান তথা সংবাদ পরিবেশনের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারতের ১ কোটি ৩০ লক্ষ বাংলাভাষী মানুষের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় নাম।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মূলত সংবাদভিত্তিক অনুষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে বিবিসি বাংলার সংবাদ টিম। নির্ভরযোগ্য এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও সংবাদ বিশ্লেষণ বাংলাদেশ ও ভারতের প্রায় এক কোটি শ্রোতার কাছে পৌঁছে দিচ্ছে বিবিসি বাংলা। ১৯৪১ সালের ১১ই অক্টোবর যাত্রা শুরুর লগ্নে প্রতি সপ্তাহে প্রচারিত হোত একটি মাত্র অনুষ্ঠান যা ছিল মূলত একটি নিউজলেটার। অনুবাদ করে তা পড়তেন বিভিন্ন জন।
![৭৬ বছর পথ পাড়ি ৭৬ বছর পথ পাড়ি](https://www.joynewsbd.com/wp-content/uploads/2018/10/বিবিসি-বাংলা-3-300x169.jpg)
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জয়নিউজকে বলেন, বিবিসি এই অঞ্চলের পাঠক দর্শকদের সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত। বিবিসির সেরা দুইজন সাংবাদিক স্যার উইলিয়াম মার্ক টালি ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী বিবিসি’র নয়াদিল্লি ব্যুরোর সাবেক প্রধান। অপরজন সায়মন ড্রিং, যিনি বাংলাদেশের গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম বিদেশী সাংবাদিক যিনি নিজের জীবন বিপন্ন করে সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরী করে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেন পাকিস্তানী বাহিনীর লোমহর্ষক নির্যাতন ও গণহত্যার কথা। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা এবং সংবাদ উপস্থাপন শৈলীর দিক থেকে বিবিসি বাংলা স্বতন্ত্র ধারা তৈরি করেছে।
![৭৬ বছর পথ পাড়ি ৭৬ বছর পথ পাড়ি](https://www.joynewsbd.com/wp-content/uploads/2018/10/bbc-300x237.jpg)
বিবিসি বাংলার ঢাকা ব্যুরোর সম্পাদক ওয়ালিউর রহমান মিরাজ। জয়নিউজকে তিনি জানান, বিবিসি বাংলা বেশ নতুন ধরণের কিছু অভিজ্ঞতা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এখন। প্রাযুক্তিক দুনিয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রেডিও সার্ভিস থেকে টিভি হয়ে এখন পুরোপুরি অনলাইন অর্থাৎ ইন্টারনেট ভিত্তিক সিস্টেমে চলে এসেছি আমরা। ৭৭ বছরের এই দীর্ঘ সময়ে পাঠকের অভ্যাস, রুচি ও ধরণ সবই বদলে গেছে। স্বভাবতই বিবিসি বাংলা যুগের সাথে তাল মেলাতে সক্ষম।
![৭৬ বছর পথ পাড়ি ৭৬ বছর পথ পাড়ি](https://www.joynewsbd.com/wp-content/uploads/2018/10/FB_IMG_1539350379599-300x300.jpg)
দুনিয়ার অন্যতম শীর্ষ গণমাধ্যমের হয়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার অনুভূতি কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ২৬ জনের টিম। এরা বয়সে এবং অভিজ্ঞতায় ভিন্ন। কেউ রেডিও, কেউ টিভি, কেউ সোশ্যাল মিডিয়া কেউ অনলাইন সামলাচ্ছেন। অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের সমন্বয় হয়েছে আমাদের টিমে। এরকম একটি টিমে কাজ করতে পারা, নেতৃত্ব দেয়া স্বভাবতই গর্বের।
![৭৬ বছর পথ পাড়ি ৭৬ বছর পথ পাড়ি](https://www.joynewsbd.com/wp-content/uploads/2018/10/FB_IMG_1539350331176-300x169.jpg)
বিবিসি বাংলা বিভাগের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় লন্ডনে নিউ ব্রডকাস্টিং হাউজের সদর দপ্তর থেকে। ঢাকা, দিল্লি এবং কলকাতায় রয়েছে নিজস্ব ব্যুরোতে কর্মরত সংবাদদাতা। এছাড়াও লন্ডনে বিবিসি অফিসে কাজ করছেন একদল সাংবাদিক ও প্রযোজক। সাবির মুস্তাফা বিবিসি বাংলার প্রধান হলেন ২০০১ সালে। তখন থেকে বাংলা অনুষ্ঠানের চেহারা অনেক বদলেছে। বেতারের পাশাপাশি টিভিতে বাংলাদেশ সংলাপ অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মাধ্যমে সাংবাদিকতার একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে বিবিসি বাংলার জন্যে।
![৭৬ বছর পথ পাড়ি ৭৬ বছর পথ পাড়ি](https://www.joynewsbd.com/wp-content/uploads/2018/10/n4ehkiejvpybpuw7zgry-300x178.jpg)
বিবিসি বাংলার জন্মদিন উপলক্ষে একটি প্রকাশ করেছে তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছেন বিবিসির বহু সংবাদদাতা। তাদের পাঠানো তরতাজা প্রতিবেদন, তথ্য, বিশ্লেষণ ইত্যাদি বিবিসি’র অনুষ্ঠানে নিয়মিতভাবে পরিবেশন করা হয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে এর নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচারে বিপুল জনপ্রিয়তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছিল। অনলাইনের কার্যক্রম সম্প্রসারণের পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারে আরও সক্রিয় হয়েছে বিবিসির বাংলা। এরই মধ্যে বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজে ফলোয়ারের সংখ্যা এক কোটি ১৯ লাখ ৬৩ হাজার ১৫৩ জন ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে দেশের ১০টি শহরে এফএম রেডিওতেও বিবিসি বাংলার অনুষ্ঠান শোনা যাচ্ছে।