চট্টগ্রামে দুইটি আধুনিক নবসংস্কারকৃত শিশু আদালত উদ্বোধন করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
শনিবার (১৩ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনে দুইটি নতুন শিশু আদালত উদ্বোধন করেন তিনি। পরে তিনি দায়রা জজ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপত্বি করেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দার।
সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটসের (এসসিএসসিসিআর) উদ্যোগে এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ এর সহায়তায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, আজকের শিশুই আগামীর পিতা। তাই শিশুদের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। শিশু, নারী ও অনগ্রসর নাগরিকদের অগ্রগতির জন্য সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রকে বিশেষ বিধান প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
সেই আলোকে ১৯৭৪ সালে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নাগরিকদের গুরুত্বের কথা উপলব্ধি করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শিশু আইন প্রণয়ন করেন। পরবর্তী সময়ে শিশু আইন ১৯৭৪ বাতিল করে শিশু আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়।
তিনি বলেন, একসময় সমাজতান্ত্রিক দেশে শিশুদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও সুযোগ দেওয়া হতো। আজ তা নেই। তবে বর্তমান সরকার শিশুবান্ধব। তাই শিশুদের সুরক্ষায় আমরা সব রকমের আইন প্রণয়ন করেছি।
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দার বলেন, কোনো শিশুই অপরাধী হয়ে জন্মায় না। পরিবেশ পরিস্থিতি একজন শিশুকে অপরাধী করে তোলে। ২০১৩ সালের শিশু আইনে শিশুদের সুন্দর পরিবেশে বিচারের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।
প্রচলিত আদালতের মতো লালসালু ঘেরা এজলাস বা কাঠগড়া থাকবে না শিশু আদালতে। শিশুরা যাতে বুঝতে না পারে, তারা অপরাধী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিশু অধিকার বিষয়ক বাংলাদেশ এসসিএসসিসিআর কমিটির সদস্য ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, ইউনিসেফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ এডউইড ভেগবেদার, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জিল্লুর রহমানসহ জেলা জজ, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
সভায় ইউনিসেফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ এডউইড ভেগবেদার বলেন, ইউনিসেফ শিশুবান্ধব আদালত গড়ে তুলতে এবং শিশুদের উন্নয়নে বাংলাদেশের সঙ্গে সবসময় থাকবে। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে শিশু আদালত কক্ষ স্থাপিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। শিশু আদালতের জন্য পৃথক কক্ষ স্থাপনের ফলে শিশুবান্ধব পরিবেশে বিচারকাজ সম্ভব হবে।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, শিশুরাই দেশ ও জাতির কর্ণধার। জাতির ভবিষ্যৎ অগ্রগতিতে নেতৃত্ব দেবে আজকের শিশু। ফলে তাদের আদর্শ মানুষ ও শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও মানসিক বিকাশে আমাদের সচেতন হতে হবে। কোনো শিশুই অপরাধী হয়ে জন্ম নেয় না। পরিবেশ-পরিস্থিতি কোনো শিশুকে অপরাধী বানায়।
এ সময় উদ্বোধন হওয়া দুইটি কক্ষের মধ্যে একটি পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জয়নিউজ/আরসি