নীরবেই চিরবিদায় নিলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রবাদপ্রতীম গুরু অন্নপূর্ণা দেবী (৯১)। শনিবার (১৩ অক্টোবর) ভোর রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে প্রখ্যাত এই শিল্পীর মৃত্যু হয়।
১৯২৭ সালের ২৩ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের মাইহারে জন্ম নেওয়া অন্নপূর্ণার আসল নাম রওশন আরা বেগম। ‘বাবা’ নামে খ্যাত ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের দিকপাল ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ তার বাবা। কিংবদন্তি সরোদবাদক আলী আকবর খাঁ তার ভাই। আর সেতারবাদক পণ্ডিত রবিশঙ্কর তার প্রথম স্বামী।
অন্নপূর্ণা দেবী কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন। অসুস্থতা নিয়ে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে ভারতের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
বাবা আলাউদ্দীন খাঁর কাছে সংগীতের হাতেখড়ি পাওয়া অন্নপূর্ণা কৈশোরেই তারযন্ত্র সুরবাহার বাদনে অসামান্য পারদর্শিতা অর্জন করেন। তবে শাস্ত্রীয় সংগীতকে তিনি কখনো পেশা হিসেবে নেননি। মেয়ের বাদনের প্রশংসায় ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ বলেছিলেন, ‘আমার বাজনা যদি সত্যিকার কেউ বাজিয়ে থাকে, তো সে আমার মেয়ে।’
অন্নপূর্ণা নিজেও শাস্ত্রীয় সংগীতের দীক্ষা দিয়েছেন বহু শিল্পীকে। পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, প-িত নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, পণ্ডিত অমিত ভট্টাচার্য, নিত্যানন্দ হলদিপুর, সেতারবাদক রুশিকুমার পাণ্ডে, পণ্ডিত প্রদীপ বরাটের মত সুর সাধকরা রয়েছেন তার শিষ্য তালিকায়।
১৪ বছর বয়সে পণ্ডিত রবিশঙ্করকে বিয়ে করে রওশন হয়ে যান অন্নপূর্ণা দেবী। তাদের ছেলে শুভেন্দ্র শঙ্কর শুভ অল্প বয়সে মারা যান। পরে রুশিকুমার পাণ্ডের সঙ্গে বিয়ে হয় অন্নপূর্ণার।
টানাপড়েনের মধ্যে তার বিচ্ছেদ হয় রবি শঙ্করের সঙ্গে। এরপর নিজেকে অনেকটাই আড়ালে নিয়ে যান অন্নপূর্ণা। নিভৃতেই চলতে থাকে তার সংগীত সাধনা আর শিক্ষাদান।
ভারত সরকারের পদ্মভূষণ, সংগীত নাটক আকাদেমি অ্যাওয়ার্ড, দেশিকোত্তমসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি।
জয়নিউজ/আরসি