লামায় ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাব মোকাবেলায় জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে প্রশাসন। দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। আশ্রয়কেন্দ্র খোলার পাশাপাশি ব্যবস্থা করা হয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরাতে চলছে মাইকিং। এতকিছুর পরও অসংখ্য পরিবার এখনো পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়ে গেছে।
ঘুর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের লামায় কারণে পাহাড়ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকলে পাহাড়ধসে জান-মালের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
ইতোমধ্যে দুর্যোগকালীন সময় জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যোগাযোগের নম্বরসমূহ যথাক্রমে নির্বাহী কর্মকর্তা-০১৫৫০০০৭১৮০, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)-০১৮৪৫৭২৯৭২১ এবং পিআইও সহকারী ০১৭১৭৭১৪৭৩৬।
এদিকে গত চার-পাঁচদিন ধরে উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণদের নিরাপদে সরে যেতে তাগাদা দেয় লামা তথ্য অফিস। কিছু পরিবার নিরাপদে কিংবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিলেও বেশিরভাগ এখনো সরে যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লামা পৌরসভা এলাকা, লামা সদর, গজালিয়া, রূপসীপাড়া, সরই, আজিজনগর, ফাঁসিয়াখালী ও ফাইতং ইউনিয়নে সাড়ে ৪ হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। টানা বর্ষণের কারণে উপজেলার পাহাড়ি ঝিরি, খাল ও মাতামুহুরী নদীর পানি বেড়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তবে টানা বর্ষণ অব্যাহত থাকলেও শনিবার পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
আজিজনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দীন ও ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন কোম্পানী জানান, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের মাইকিং এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের মাধ্যমে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
অভিন্ন কথা জানান রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা, লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন, ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার ও গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা।
আশ্রয়কেন্দ্র খোলার পাশাপাশি সেখানে অবস্থান নেওয়াদের শুকনো খাবার ও পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম।
লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, ঘুর্ণিঝড় তিতলির প্রভাব মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।