মে মাসে মালয়েশিয়ার মসনদে বসেন দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়া আধুনিক মালয়েশিয়ার স্থপতি মাহাথির মোহাম্মদ। বুড়ো বয়সে তিনি যে খুব বেশিদিন দেশটির প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না তা সবার জানা।
দুই বছরের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার শর্তে একসময়ের রাজনৈতিক সতীর্থ আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে গড়েন পাকাতান হারাপান জোট। পাকাতান হারাপান জোটের অন্যতম লক্ষ্য ছিলো তৎকালীন নাজিব রাজাক সরকারের দুর্নীতির খোলস উন্মোচন এবং জনগণের মন জয় করা।
পাকাতান হারাপান জোটের শর্ত ছিলো- জোট ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন মাহাথির মোহাম্মদ। উপ-প্রধানমন্ত্রী হবেন আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী ওয়ান আজিজাহ। আর ক্ষমতায় যাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব আনোয়ার ইব্রাহিমকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে কারামুক্ত করতে হবে। অতঃপর কোনো একটি আসন থেকে উপ-নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিম জয়ী হলে দুই বছর পর তার কাছে প্রধানমন্ত্রির পদ ছেড়ে দিতে হবে মাহাথিরকে।
মে মাসে ক্ষমতায় আসার পর জোটের শর্তানুযায়ী আনোয়ার ইব্রাহিমকে কারামুক্ত করেন মাহাথির। এছাড়া এখন পর্যন্ত প্রতিটি কথাই রেখেছেন তিনি।
শনিবার (১৩ অক্টোবর) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের পোর্ট ডিকিনসনের সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। এর মাধ্যমে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে প্রবেশে আর কোনো বাধা রইলো না।
এখন ধরে নেওয়া যায়, নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেই মালয়েশিয়ার ক্ষমতায় বসবেন আনোয়ার ইব্রাহিম। যদিও মাহাথির মোহাম্মদ দেশটির প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দেশের প্রশাসনের সব কলকাঠি নাড়ছেন আনোয়ার ইব্রাহিমই।
ক্ষমতায় বসার পর দেশ থেকে দুর্নীতি উপড়ে ফেলার মিশনে নেমেছেন মাহাথির মোহাম্মদ। এরমধ্যে বিচার শুরু হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ও তার স্ত্রীর।
ক্ষমতায় বসার পর থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সবই করেছেন মাহাথির। নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হলে হয়তো প্রধানমন্ত্রিত্বও আনোয়ারের কাছে ছেড়ে দেবেন তিনি। তবে ঘটনা যা-ই ঘটুক না কেন, ঘুড়ির নাটাই কিন্তু শুরু থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমের কাছে।
জয়নিউজ/আরসি