নির্মাণকাজের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ রডের দাম এখন আকাশছোঁয়া। প্রতি টন রডের দাম ঠেকেছে ৮৮ হাজার টাকায়। সেই ধাক্কা সামাল দিতে না দিতেই এবার অস্থির সিমেন্টের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা সিমেন্টের দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা।
উৎপাদকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার কারণে দেশেও দাম বাড়ছে সিমেন্টের। তবে ব্যবহারকারীরা বলছেন, চাহিদা কম থাকলেও সিন্ডিকেট করে সিমেন্টের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
জানা যায়, দেশে প্রায় ৭০টির মতো সিমেন্ট কারখানার মধ্যে নিয়মিত সিমেন্ট উৎপাদন হয় ৩৭টির মতো কারখানায়। আবার এসব কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা বাজারের চাহিদার চেয়ে বেশি। সিমেন্ট কারখানাগুলোর কাঁচামালের প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। এর মধ্যে ভিয়েতনাম, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান থেকে ক্লিংকার (কাঁচামাল) আমদানি হয়। বেশিরভাগ আমদানি হয় ভিয়েতনাম থেকে।
রোববার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রাম ও আশপাশের এলাকা ঘুরে ঠিকাদার, সিমেন্টের ডিলার ও নির্মাণকাজে জড়িতদের সঙ্গে কথা হয়।
জানা যায়, চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে রুবি সিমেন্টের (হাইডেলবার্গ সিমেন্ট)। ৫০ কেজি বস্তার এই সিমেন্ট রোববার বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এটি বিক্রি হয়েছে ৪০৫ টাকায়। রোববার প্রিমিয়ার সিমেন্ট বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা বস্তা। এক সপ্তাহে আগেও এর দাম ছিল ৪০০ টাকা। ফ্রেশ ব্র্যান্ডের সিমেন্টের দাম রোববার ছিল ৪৩০ টাকা। গত সপ্তাহের শুরুতে এটি বস্তাপ্রতি ৩৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
চট্টগ্রামের আরেক সিমেন্ট কনফিডেন্ট রোববার বিক্রি হয়েছে প্রতি বস্তা ৪৬০ থেকে ৪৭০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এ সিমেন্ট বিক্রি হয়েছে বস্তাপ্রতি ৪০০ থেকে ৪০৫ টাকায়। একই অবস্থা ডায়মন্ড ব্র্যান্ডের সিমেন্টের ক্ষেত্রেও। অন্যদিকে এস আলম সিমেন্ট বিক্রি হয়েছে ৪২০ টাকায়, আগের সপ্তাহে যা ৩৭০ টাকা। আবার সেভেন রিং সিমেন্ট এদিন বিক্রি হয়েছে ৪৩০ টাকায়। এই সিমেন্ট আগের সপ্তাহে বিক্রি হয় ৪০০ টাকায়।
এ বিষয়ে রয়েল সিমেন্টের মহাব্যবস্থাপক আবুল মনসুর বলেন, বিশ্ববাজারে দেড় মাস আগে যে ক্লিংকার ৫০ থেকে ৫২ ডলারে বিক্রি হতো, সেই ক্লিংকারের দাম চলতি সপ্তাহে হয়েছে ৭৭ ডলার। আগে চীনের পাশাপাশি ভিয়েতনাম থেকে ক্লিংকার আসতো। এখন চীন উল্টো ভিয়েতনাম থেকে ক্লিংকার আমদানি করছে। যে কারণে ভিয়েতনামের বাজার বাংলাদেশ থেকে চীনের দিকে চলে যাচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্লিংকারের সংকট তৈরি হচ্ছে, তেমনি দামও বাড়ছে। এছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় জাহাজ পাওয়া যাচ্ছে না। ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার খরচ (পণ্য পরিবহন খরচ) বেড়ে গেছে। সবমিলিয়ে সিমেন্টের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ছে বাজারে।
সূত্র: জাগো নিউজ
জয়নিউজ/পিডি