পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখোরিত চট্টগ্রামের আনোয়ারা পারকি সৈকত। সৈকতের ঢেউয়ে আনন্দ আর উল্লাসে মেতেছেন তারা।
গত দুই বছর করোনা নিষেধাজ্ঞার পর এবার ঈদে বিধি-নিষেধহীন ছুটিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা ছুটে আসে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তমত এই সমুদ্র সৈকতে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করেছে প্রশাসন।
সরেজমিনে সৈকত এলাকায় দেখা গেছে, শিশু থেকে সব বয়সের লোক এসেছে সমুদ্র সৈকত অবলোকন করতে। কেউ ফুটবল খেলছে, কেউ দৌড়াদৌড়ির পর সৈকতের নোনা জলে গোসল করছে। সৈকতে কথা হয় রাঙ্গুনিয়া থেকে স্ব-পরিবারে বেড়াতে আসা জাকির হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, করোনার কারনে দুই বছর পরিবার নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়া যায়নি, বন্দী জীবন কাটিয়েছি। এ বছর পরিবারের সাবাইকে নিয়ে ঈদের ছুটিতে সৈকতে বেড়াতে আসলাম।
জানা যায়, করোনা মহামারিতে বিগত দুই বছর বিধি নিষেধের কারনে পারকি সৈকতে পর্যটকের ধস নামে। এতে করে সৈকত কেন্দ্রিক ব্যবসায়িরা বেশ ক্ষতির মুখে পড়ে। এ বছর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় পর্যটকদের ঢল নেমেছে। শত শত নারী-পুরুষ ঈদের ছুটিতে সময় কাটাতে সৈকতে ছুটে আসছে। বাস, প্রাইভেট কার, জীপ-ট্রাক কিংবা মোটর সাইকেলে করে পর্যটকেরা আসছেন পারকিতে। তরুণেরা দল বেঁধে ডিজে পার্টি নিয়ে আনন্দ-উপভোগ করেছে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে সড়ক পথে পারকি সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব মাত্র ২০ কিলোমিটার। নদী পথে পতেঙ্গার ঠিক উল্টোদিকে এই সৈকতের অবস্থান। সৈকতের পাশ দিয়ে কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্প, নদী-সাগর মোহনা, বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজের আসা-যাওয়ার মনোরম দৃশ্য, সারি সারি ঝাউগাছ, ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত, বেলাভূমিতে হাজারো লাল কাঁকড়ার বিচরণ ইত্যাদি এত সব সৌন্দর্য বিবেচনায় কক্সবাজার আর কুয়াকাটার পর পারকিকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন সূত্র জানায়, পারকিকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার নিমিত্তে রায়পুর ইউনিয়নের ফুলতলী মৌজায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ শতক জমির উপর ট্যুরিজম জোন তৈরি করা হচ্ছে। এতে থাকছে আকর্ষণীয় রিসোর্ট, আবাসিক হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র, পুলিশ ফাঁড়িসহ নানা সুযোগ সুবিধা।
বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সৈকত ব্যাবস্থাপনা কমিটির সদস্য এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, পারকি সমুদ্র সৈকতে আমাদের অভিভাবক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর প্রচেষ্টায় ট্যুরিজম জোন তৈরি হচ্ছে। এ কাজ শেষ হলে পারকি আধুনিক মানের পর্যটন এলাকায় রুপ পবে।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল মাহমুদ বলেন, ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। সৈকত ও আশপাশ এলাকা জুড়ে পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবাইয়ের আহমদ বলেন, আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকত একটি চমৎকার পর্যটন স্পট। পারকি সৈকতকে আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এখানে আধুনিক মানের হোটেল, গাড়ি পার্কিং এর ব্যাবস্থা, পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ ও স্থায়ী মার্কেট গড়ে তোলা হবে।
এন-কে