মাত্র ১৫ দিন আগেও যে ছেলেটি দেশে মা-বাবা ভাই বোন ও স্ত্রী এবং ১০ মাস বয়সী শিশু সন্তানের মায়া মমতার আবদ্ধে বন্দি ছিলো। আজ প্রবাসে তার নিথর দেহ পড়ে আছে।
দেশের মায়া ত্যাগ করে মধ্যপ্রচ্যের ওমানে পারি দিয়েছিলেন মাত্র ১৫ দিন আগে। কর্মস্থলে যোগ দেয়ার আগেই পরিবারের সকল আশা আকাঙ্খা ধুলিসাৎ করে চলে যেতে হলো পরপারে।
গতকাল মঙ্গলবার ওমানের স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ৪নং মরিয়মনগর ইউনিয়নের পাঁচবাড়ি গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মো. ইকবাল হোসেন (৩২)।
তার মৃত্যুর খবরে পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম। আর কবে, কখন, কিভাবে তার লাশ দেশে আসবে সে আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছে।
ওমানপ্রবাসী শাহেদ আলম আশরাফী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওমানের আবু আলওয়ালী এলাকার রাস্তার পাশের একটি হোটেল থেকে রাতের খাবার নিয়ে বাসায় ফেরার পথে দ্রুতগামী একটি গাড়ির ধাক্কায় ইকবাল গুরুতর আহত হন।
পরে পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত ইকবাল হোসেন পরিবারের ৩ ভাই ২ বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তিনি ১৫ দিন আগে জীবিকার প্রয়োজনে ওমানে গিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি সেই দেশে কাজ করার অনুমোদনপত্র (ওয়ার্ক পারমিট কার্ড) পেয়েছিলেন।
সেই খুশিতে বন্ধুবান্ধব নিয়ে বাসায় খাওয়ার আয়োজন করেন তিনি। সেই খাবার আনতে রাতে সাইকেল নিয়ে হোটেলে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে এক এরাবিয়ানের দ্রুতগতির গাড়ির ধাক্কায় মারা যান। তাঁর ১০ মাস বয়সী এক পুত্রসন্তান রয়েছে।
এদিকে ছেলে হারানো বাবা-মায়ের আকাশ ভারী করা আহাজারি। ১০ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে বুকে নিয়ে স্ত্রীর কান্না আর চোখের পানি যেন থামছেইনা। নির্বাক হয়ে পড়েছেন ভাইবোনসহ আত্মীয়-স্বজনরা।
তাদেরকে সান্ত্বনা দেয়ার সাধ্য যেন নেই কারো। শোক শুধু ওই পরিবারে নয়, গোটা এলাকায় চলছে শোকের মাতম। সদা হাস্যোজ্জ্বল সদালাপি ইকবালের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তাই শোকাহত গ্রামবাসী ভীড় করছেন তাঁর গ্রামের বাড়ীতে।
নিহত ইকবালের লাশ দেশে আনতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়েছেন তাঁর পিতা আবুল কালাম।
জেএন/টিটি