পদ্মা সেতুর আদলে কর্ণফুলী নদীর ওপর ৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে কালুরঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের প্রাথমিক নকশা তৈরি করেছে কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান।
বুধবার (৬ জুলাই) চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সিআরবিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ কথা জানানো হয়েছে। কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর অগ্রগতি নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেতুর সম্ভাব্য দাতা সংস্থা কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সিম ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রতিষ্ঠান ইওসিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন অ্যান্ড দোহা প্রাথমিক সমীক্ষা শেষে সেতু নির্মাণের স্থান, নকশা, ব্যয় ও নির্মাণকাল নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তাবনা সভায় রেলওয়ের কাছে তুলে ধরে।
সভা শেষে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রস্তাবিত নকশায় বলা হয়েছে, ব্রিজের উপরের ডেকে থাকবে সড়ক যোগাযোগের পথ। নিচে থাকবে রেললাইন। দুটিই ডাবল লেন হবে। সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হবে ৭৮০ মিটার। এর মধ্যে নদীর বাইরে স্থলপথে থাকবে ৫ দশমিক ৬২ মিটার। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য হবে ১০০ মিটার। সেতুর উচ্চতা হবে ১২ দশমিক ২ মিটার। মোট পিলার থাকবে আটটি।
তিনি বলেন, সেতুর জন্য প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। সমীক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আমাদের জানিয়েছে, আগস্টে তারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর টেন্ডার হবে। নির্মাণকাজ শেষ করতে প্রায় চার বছর লাগবে বলে আমাদের বলা হয়েছে। টেন্ডার শেষ করতে ছয় থেকে আট মাস সময় লাগবে। তারপর ইডিসিএফ ফান্ড দেবে। ফান্ড দিলেই ফাইনাল কাজ শুরু হয়ে যাবে। আগামী বছর আমরা কাজ শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।
সভার শেষে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য মোছলেন উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতুর আদলেই কালুরঘাট ব্রিজটি হবে। নিচে দিয়ে রেললাইন যাবে। রেললাইনে দুটি লেন থাকবে আসা যাওয়ার জন্য। আর উপরে থাকবে সড়ক যোগাযোগের জন্য।
তিনি বলেন, ২০১০ সালে কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু উদ্বোধন করতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন আমরা সিডিএর মাঠে একটি জনসভা করেছিলাম। সেখানে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, কালুরঘাটেও একটি নতুন সেতু নির্মাণ করে দেবেন। যেটাতে একপাশে গাড়ি এবং নিচে ট্রেন চলতে পারবে। কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছর সময় গেছে। আমার আগে যিনি এমপি ছিলেন তিনিও চেষ্টা করেছিলেন, হয়নি।
তিনি বলেন, প্রাথমিক সমীক্ষা শেষে সেতু নির্মাণের স্থান, নকশা, ব্যয় ও নির্মাণকাল নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তাবনা তারা তৈরি করেছে। আগামী আগস্টে তারা সরকারের কাছে সেটি জমা দেবে। এজন্য তারা আজ রেলের সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক হয়েছে। নকশাটি খুব সুন্দর হয়েছে। তবে নির্মাণ ব্যয়ও বেড়েছে। সেতু নির্মাণে পুরো টাকা-ই কোরিয়া দেবে।
জেএন/এমআর