সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধার অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহগুলোর মধ্যে আটজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক।
এই আটজন হলেন আকতার হোসেন, আবুল হাশেম, বাবুল মিয়া, মনির হোসেন, মো. সাকিব, মো. রাসেল, মো. শাহাজান ও আব্দুস সুবহান প্রকাশ আব্দুর রহমান।
সুমন বণিক বলেন, ‘বুধবার রাতে আমরা ডিএনএ পরীক্ষার ফল হাতে পেয়েছি। প্রথম দফায় আটটি অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই মরদেহগুলোর মধ্যে পাঁচটি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, দুটি আঞ্জুমানে মুফিদুলে এবং একটি কক্সবাজারে রয়েছে। আমরা এই আটজনের পরিবারকে খবর দিয়েছি, তারা এসে মরদেহ নিয়ে যেতে পারবে।’
নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানাধীন (জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি) প্রতিষ্ঠান বিএম কনটেইনার ডিপো সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায়। বাংলাদেশে এর মালিকানা স্মার্ট গ্রুপের। গ্রুপের চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমানই ডিপোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তার ছোট ভাই মুজিবুর রহমান।
এই ডিপোতে গত ৪ জুন রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। রাত ১১টার দিকে প্রথম বড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
একে একে ছুটে যায় চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলা থেকেও পরে যোগ দেয় কয়েকটি ইউনিট। ৫ জুন সকাল পর্যন্ত আগুন নেভাতে আসা ইউনিটের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৫টি। কিন্তু কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
৮৭ ঘণ্টা পর ৮ জুন দুপুরে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নেভে। আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনার প্রথম দুই দিনে ৪১টি মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চারজন। বুধবার পর্যন্ত বিভিন্ন সময় দেহাবশেষ পাওয়া গেছে ছয়জনের। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫১ জন হিসাব করা হচ্ছে।
প্রথম দুই দিনে উদ্ধার ৪১ মরদেহের মধ্যে পরিচয় পাওয়া যায় ২৫ জনের। এরপর ঢাকা ও চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনজন। ৬ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয় ছয়টি। এরপর প্রথম দফায় ডিএনএ পরীক্ষায় পরিচয় মেলে আটটি মরদেহের। সেই হিসাবে এখন পর্যন্ত পরিচয় শনাক্ত হয়নি আরও ১৫ জনের।
জেএন/এমআর