চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরেক আসামি সাইফুলকে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এনিয়ে নিপীড়নের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করল র্যাব।
শনিবার (২৩ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
তিনি বলেন, চবি ছাত্রীকে নিপীড়নের ঘটনায় সাইফুল নামে একজনকে বহদ্দারহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
গ্রেপ্তার মো. সাইফুল (২৩) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের বাসা। তবে সাইফুল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র নয় বলে জানা গেছে।
র্যাব জানিয়েছে, সাইফুল ঘটনার নেতৃত্ব দেওয়া আজিমের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এর আগে শনিবার (২৩ জুলাই) সকালে র্যাব-৭ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মো. আজিমসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় ছয়জন সম্পৃক্ত ছিলেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- চবির ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আজিম (২৩) ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুল আবছার বাবু (২২), হাটহাজারী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নুর হোসেন শাওন (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা মাসুদ (২২)।
তিনি বলেন, মূল অভিযুক্ত আজিম ইতিহাস বিভাগের ছাত্র। তার নেতৃত্বই এ ঘটনা ঘটে। তার বাসাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এলাকায়। আজিম ক্যাম্পাস এলাকায় একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। তার নেতৃত্বে ছয়জন দুটি মোটরসাইকেলযোগে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, প্রথমে আজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে বাকি ৫ জনের নাম পাওয়া যায়। ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল দুটি ছিল সাইফুল ও শাওনের।
তিনি বলেন, গত ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে বন্ধুর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকা থেকে হলের দিকে ফিরছিলেন ওই ছাত্রী। আজিম ও তার গ্রুপ চবি এলাকায় রাতে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় হয়রানির শিকার ছাত্রী ও তার ছেলে বন্ধুর দিকে হঠাৎ নজর পড়ে আসামিদের। তারা গিয়ে প্রথমে ছাত্রী ও তার ছেলে বন্ধুকে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করে চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে তারা মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়। তাদের দুজনকে আটকে রেখে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। মারধরের একপর্যায়ে ছাত্রীটিকে বিবস্ত্র করে ফেলে আসামিরা। এছাড়া শ্লীলতাহানি করে ও ভিডিও ধারণ করে। এরপর তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে ছেড়ে দেয়।
তিনি বলেন, আসামিরা তিনটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। মোবাইল তিনটি জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আজিমের আর দুটি মোবাইল ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুর। আটককৃতদের হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেএন/কেকে