চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরের ৮০ হাজার গ্রাহকের কাছে ‘বিশুদ্ধ পানি’ সরবরাহ করছে। এসব পানির মান যাচাইয়ে প্রতিমাসে নিজস্ব উদ্যোগে পরীক্ষা করে আসছে সংস্থাটি।
তবে গত ৬ মার্চ উচ্চ আদালতের এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিত পানির মান যাচাইয়ে করা হয় চার সদস্যের কমিটি।
গত ৬ মার্চ এক রিটের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি পরীক্ষা করতে চার সদস্যের কমিটি গঠনের আদেশ দেন উচ্চ আদালত। সেই আদেশের প্রেক্ষিতে ১৩ জুন থেকে ওয়াসার ২৪ পয়েন্টের নমুনা নেওয়া হয় শুরু করে কমিটি। পরে নমুনা পানিগুলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের মাইক্রোবায়েলজি বিভাগ, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) ও পরিবেশ অধিদপ্তরে ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে লাভলেইনে অবস্থিত চট্টগ্রাম ওয়াসার গভীর নলকূপের পানি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পরীক্ষা করা হলে কলিফর্মের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ‘কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার’ উপস্থিতি ধরা পড়েছে। এই ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন আন্ত্রিক ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি করে।
এছাড়া কলিফর্ম মিশ্রিত পানি পানে ডায়রিয়া, আমাশয়, রক্ত আমাশয়, কলেরা, টাইফয়েড ছাড়াও ভাইরাল হেপাটাইটিস (জন্ডিস) রোগের সূচনা হয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত পানি পানের আগে অবশ্যই ১৫ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে এসব জটিল রোগ থেকে বাঁচতে।
রোববার বিকেলে পানির নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে পাঠিয়েছে তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, লাভলেন এলাকায় অবস্থিত ওয়াসার গভীর নলকূপের পানি একটি ল্যাবে পরীক্ষার পর সে পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা শোচনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি। অবশ্য পরিশোধনের মাধ্যমে ওয়াসা যেসব সারফেস ওয়াটার (ভূমির উপরিভাগের পানি) গ্রাহকদের সরবরাহ করছে সেগুলোতে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। উচ্চ আদালত থেকে পরবর্তী নির্দেশনা পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ উচ্চ আদালতে এক রিট আবেদেনের প্রেক্ষিতে গঠিত কমিটির সদস্যরা হলেন— চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের একজন শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিসিএসআইআর ল্যাবরেটরির একজন প্রতিনিধি ও চট্টগ্রাম বিভাগ পরিবেশ ল্যাবরেটরির একজন প্রতিনিধি।
জয়নিউজ/পিডি