চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জন ও আহত ৬ জনের পরিবারে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
আজ রবিবার (৩১ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হতাহত পরিবারের মাঝে নগদ এসব অর্থ সহায়তা তুলে দেন হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শহিদুল ইসলাম নগদ।
আর্থিক সহায়তার আওতায় নিহতদের দাফন কাজের জন্য ২৫ হাজার ও আহতদের পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।
হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শহিদুল ইসলাম এ তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, মিরসরাইয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহত ১৭ পরিবারের হাতে মোট ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
এরমধ্যে নিহত ১১ জনের প্রত্যেকের পরিবারের হাতে ২৫ হাজার করে মোট ২ লাখ ৭৫ হাজার এবং আহত ৬ পরিবারের মাঝে ১৫ হাজার টাকা করে মোট ৯০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর পৌনে ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা মীরসরাইয়ে খৈয়াছড়া ঝরনা দেখতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দুপুরে খৈয়াছড়া রেল স্টেশনের কাছে লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় মাইক্রোবাসটির সঙ্গে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রেন মহানগর প্রভাতীর ধাক্কা লাগে।
ট্রেনটি প্রায় এক কিলোমিটার দূরে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসটিকে। দুমড়ে-মুচড়ে যায় যানটি। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১১ জন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছয়জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠান।
দুর্ঘটনার পর বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ। পরে রিলিফ ট্রেন এসে দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটিকে সরিয়ে ফেলার পর স্বাভাবিক হয় রেল চলাচল।
হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে চালক ও তাঁর সহকারী ছাড়া সবাই হাটহাজারীর ‘আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ও শিক্ষক। তাঁদের সবার বাড়ি খন্দকিয়া গ্রামে।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- উপজেলার আজিম সাবরেজিস্ট্রার বাড়ির হাজি মো. ইউসুফের ছেলে মাইক্রোচালক গোলাম মোস্তফা নিরু (২৬), চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইলিয়াছ ভুট্টোর ছেলে মোহাম্মদ হাসান (১৭), একই ইউনিয়নের খোন্দকার পাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে জিয়াউল হক সজীব (২২), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আজিজ মেম্বার বাড়ির জানে আলমের ছেলে ওয়াহিদুল আলম জিসান (২৩), মজিদ আব্বাস চৌধুরী বাড়ির বাদশা চৌধুরীর ছেলে শিক্ষক রিদুয়ান চৌধুরী (২২), পারভেজের ছেলে সাগর (১৭) ও একই এলাকার আবদুল ওয়াদুদ মাস্টার বাড়ির আবদুল মাবুদের ছেলে ইকবাল হোসেন মারুফ (১৭), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোজাফফর আহমেদের ছেলে মোসহাব আহমেদ হিসাম (১৬), আব্দুল আজিজ বাড়ির মৃত পারভেজের ছেলে তাসমির হাসান (১৭), মনসুর আলমের ছেলে মো. মাহিম (১৭), ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবু মুসা খানের বাড়ির মোতাহের হোসেনের ছেলে মোস্তফা মাসুদ রাকিব (১৯)।
জেএন/পিআর