চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় ১৯০০ মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮ লাখের ঘর।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, ইতালি, মেক্সিকো, জাপান ও হাঙ্গেরি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৮ কোটি ৪৯ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ লাখ ২৬ হাজার।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৮৮২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে দেড়শোর বেশি। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ২৭৫ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ লাখ ১৫ হাজার ১১৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৮০ হাজারেরও বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ কোটি ৪৯ লাখ ৬৬ হাজার ৫১১ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮০১ জন এবং মারা গেছেন ১২৫ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩১ লাখ ১৩ হাজার ৩০১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩২ হাজার ৮১৯ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৮৮৪ জন এবং মারা গেছেন ৪১৬ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৮২ হাজার ৯১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৫৭ হাজার ২২৪ জন মারা গেছেন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭৩ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৯০০ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৩৯ লাখ ২৭ হাজার ৩২৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৬ জনের।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ৭৮৮ জন এবং মারা গেছেন ৯০ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার ১৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৭০ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৬৬ জন এবং মারা গেছেন ২৬ জন।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৬২১ জন এবং মারা গেছেন ১৭১ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার ৬০০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৮ জন মারা গেছেন। একইসময়ে মেক্সিকোতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৩৬৩ জন এবং মারা গেছেন ১৩৩ জন।
তাইওয়ানে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩২ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৩ হাজার ৯১৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৬ লাখ ৫২ হাজার ১৮৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ২৬ জনের। একইসময়ে ইরানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৫৪০ জন এবং মারা গেছেন ৭৫ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৩ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৪ হাজার ৬৩৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৬ হাজার ৭৪১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৬০ জনের। একইসময়ে নিউজিল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৯৪ জন এবং মারা গেছেন ২৮ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৯৬৭ জন এবং মারা গেছেন ৬৫ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৪৩২ জন এবং মারা গেছেন ৩২ জন। হাঙ্গেরিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ হাজার ৮৪০ জন এবং মারা গেছেন ৯৬ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
জেএন/কেকে