অবৈধভাবে দেশে স্বর্ণ চোরাচালানের মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাজুস নেতারা।
তারা বলেন, দেশে অবৈধভাবে আসা স্বর্ণের সিকিভাগ বা ২৫ শতাংশও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর নজরে আসছে না। ফলে অনেকটা নির্বিঘ্নে নিরাপদে দেশে আসছে চোরাচালানের বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের চালান। আবার একইভাবে পাচারও হচ্ছে। বাংলাদেশ যে স্বর্ণ চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, এটা এখন কথার কথা নয়। বরং বর্তমান বাস্তবতায় তা প্রতিষ্ঠিত সত্য।
জুয়েলারি শিল্পের চলমান অস্থিরতা, সংকট ও চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্যসহ অর্থপাচার ও চোরাচালান বন্ধে কাস্টম এবং আইন প্রয়োগকারী অন্য সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বাজুসের সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান দোলন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাজুসকে সম্পৃক্ত করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কড়া নজরদারি প্রয়োজন। আইন প্রয়োগকারী সব দপ্তরের সমন্বয়ে স্বর্ণ চোরাচালানবিরোধী সেল গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে প্রতিদিন সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশপথে কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ স্বর্ণালংকার চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আসছে। ৩৬৫ দিন বা এক বছর শেষে এ অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। দেশে চলমান ডলার সংকটে বিপুল পরিমাণ অর্থের এই পাচার ও চোরাচালান বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
এছাড়া চোরাচালান প্রতিরোধ করতে গিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সদস্যদের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ এসব সংস্থার সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে।
এনামুল হক খান দোলন বলেন, মূলত চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাজুসের এ প্রস্তাবনা। এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয়ও কমবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/কেকে