এই শোকের মাসে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ব্যাপকভাবে ধারন করার কথা ব্যক্ত করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র মো. ফাহিনূর আলম অভি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি আঞ্চলিক সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের সকল বঞ্চিত ও শোষিত মানুষের সংগ্রামের প্রতীকে পরিণত হন।’ তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ সম্ভব হতো না। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত শক্তিশালী নৈতিকতাসম্পন্ন নীতি-আদর্শ ও আকর্ষনীয় নেতৃত্বের গুণাবলী আমাদের জন্য একটি চিরন্তন অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’ ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এই ছাত্র আরো বলেন, ‘আমরা সবাই যদি শোষণ-নির্যাতনের জাল ছিন্ন করে স্বাধীন হওয়া এ দেশকে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে পরিচালিত করতে দৃঢ়প্রত্যয়ী হই, তবে বৈষম্যহীন সমতাভিত্তিক একটি ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী তাসলিমা মেহরিন বঙ্গবন্ধুকে ‘অসীম সাহসের প্রতীক ও নির্ভীক নায়ক’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘আজ থেকে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের নাম পূর্ব পাকিস্তানের পরিবর্তে শুধু বাংলাদেশ হবে।’ বঙ্গবন্ধু এমন এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন- যিনি সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণের পথ দেখিছিলেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত জাতি বিনির্মানে জাতির পিতার অবদানের কথা স্মরণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শিখিয়েছিলেন যে- শোষণ-নির্যাতন থেকে মুক্তির জন্য লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। তাসলিমা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত, বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ তবে বাঙালিরা সুখী হতো।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর ছাত্র মেহেদী মামুন অন্যায়ের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমার মতে জাতির পিতা শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি কামান।’ তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করেছিলেন যে- শিক্ষা বৈষম্য হচ্ছে শোষণ-নির্যাতনের মূল হাতিয়ার। আর এজন্যই তিনি অবিভক্ত পাকিস্তানের ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ১৯৭০ সালের ২৮ অক্টোবর জাতীয় টেলিভিশন ও রেডিওতে জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে শিক্ষার অব্যহত বৈষম্যের বিষয়টি তুলে ধরেন। ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মামুন বলেন, স্বাধীনতার পরপরই প্রথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মো. কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে জাতীয় শিক্ষা কমিশন (কুদরত-ই-খুদা কমিশন) গঠন করেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর ছাত্র মো. রনি মোল্লা বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন একজন নেতা, যিনি সব ধরনের অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন। মোল্লা বলেন, ‘জাতির পিতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আমাদের গোটা জাতির জন্য অনুপ্রেরণা ও গর্ব। তিনি আমাদের আদর্শ।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের ছাত্র নাইম হাসান স্বাধীন বাংলাদেশে চিকিৎসকদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর নিদের্শনার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের সাধারন মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্য চিকিৎসকদের গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষবর্ষের ছাত্রী আইভি আক্তার বঙ্গবন্ধুকে একজন ক্যারিশমাটিক নেতা অভিহিত করে বলেন, জাতির পিতার জনগণকে প্রভাবিত করার অসাধারন সামর্থ ছিল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর এই নেতৃত্বগুণকে কাজে লাগিয়ে শান্তিপ্রিয় বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণে উদ্ভুদ্ধ করে দখলদার বাহিনীর কবল থেকে দেশকে মুক্ত করেছিলেন।
জেএন/কেকে