ইউসিবি তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ২৮ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল টাইগাররা। এদিন শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েসের ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে ২৭১ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ দল। এই লক্ষ্য টপকে জয় তুলে নিতে সফরকারীদের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন দুই ব্যাটসম্যান হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সেফাস ঝুয়ায়ো। শুরু থেকেই ব্যাট চালিয়ে খেলতে থাকেন ঝুয়ায়ো। মুস্তাফিজের বলে আউট হওয়ার আগে মাসাকাদজার সাথে ৪৮ রানের পার্টনারশিপে খেলেন ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস।
এর পরপরই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেইলরকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। এর খানিক বাদেই রান আউটে কাটা পড়েন আরেক ওপেনার মাসাকাদজাও, খেলেন ২১ রানের ইনিংস। সেখান থেকে ক্রেইগ আরভিন আর সিকান্দার রাজা ইনিংস মেরামতের কাজ করতে চাইলেও পারেননি। তাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান অপু। নিজের করা সপ্তম ওভারে রাজাকে ফেরান এই স্পিনার। ফলে ৮৮ রানেই চার উইকেট হারিয়ে বসে রোডেশিয়ানরা।
এর ১২ রান পরেই মিরাজের বলে আরভিন আউট হয়ে গেলে জয়ের আশা একপ্রকার ওখানেই ফিকে হয়ে যায় জিম্বাবুইয়ানদের। সেখান থেকে তবু দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন উইলিয়ামস ও পিটার মুর। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ৪৫ রান। ২৬ রানে থাকা মুরকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে এই জুটিও ভাঙ্গেন মিরাজ। তারপর শেষদিকে উইলিয়ামস জার্ভিস জুটি আগ্রাসী ব্যাটিং করলেও তা পর্যাপ্ত ছিলো না জয়ের জন্য। পরে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৩ রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস।
ফলে ২৮ রানে ম্যাচ জিতে নিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ দলে। দলের হয়ে মিরাজ ৩, অপু ২, মাহমুদউল্লাহ ১ ও মুস্তাফিজ নিয়েছেন ১টা করে উইকেট।
এর আগে বাংলাদেশ দলের হয়ে এদিন ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন আসেন দুই ব্যাটসম্যান লিটন আর ইমরুল। শুরুটা দেখে করলেও ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে চাতারার শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৪ রানে ফেরেন লিটন।
লিটনের আউটের পর ব্যাট হাতে আসেন বাংলাদেশের হয়ে ৩০ বছর বয়সে আজই অভিষেকের ক্যাপটা পাওয়া বহুল আলোচিত ক্রিকেটার ফজলে রাব্বি। তবে করতে পারেননি নিজের নামের প্রতি সুবিচারটা, শূন্য হাতে ফিরেছেন ওই ওভারেরই শেষ বলে যেয়ে। এরপর চারে ব্যাট করতে আসা দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও ইমরুল কায়েস মিলে ইনিংস মেরামতের কাজ করলেও পরে তৃতীয় উইকেটে ৪৯ রানে জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক।
দলীয় ৬৬ রানে তিন উইকেট হারানোর মোহাম্মদ মিঠুনকে ভালো সামলাচ্ছিলেন ইমরুলে কায়েস। তবে তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি মিঠুন, ফিরিছেন ৩৭ রানে। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (০) এবং মেহেদি হাসান মিরাজ (১) আউট হয়ে গেলে দলীয় ১৩৭ রানে ৩ উইকেট থেকে স্কোরটা ক্ষণিকের মধ্যে হয়ে যায় ৬ উইকেটে ১৩৯। সতীর্থদের আসাযাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রাখা ইমরুল নিজের খোলস ছেড়ে বের হতে পারছিলেন না সঙ্গীহীনতাতে। পর পেলেন সেই সুযোগ, জুটি গড়লেন সাউফউদ্দিনের সাথে।
সেখান থেকে দীর্ঘদিন বাদে একাদশে সুযোগ পাওয়া সাইফউদ্দিনকে নিয়ে তৈরি করেন ১২৭ রানের পার্টনারশিপ। এই ফাঁকে অবশ্য তুলে নেন এই ফরম্যাটে নিয়েছেন নিজের তৃতীয় শতকটা। এরপর হয়েছেন আরো আগ্রাসী। ১৩টা চার ও ১৩টা ও ৬টা ছয়ের সাহায্যে শতকটাকে টেনে নিয়ে গেছেন ১৪৪ পর্যন্ত, ফিরিছেন ইনিংসের ৪৯ তম ওভারে। ইমরুলের এই ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের কল্যাণেই ২৭১ রানের বিশাল পুঁজি পায় বাংলাদেশ দল।
এদিন অবশ্য কম যাননি সাইফউদ্দিনও। ইমরুলের সাথে সমান তালে ব্যাট চালিয়ে তুলে নিয়েছেন নিজের ওয়ানডেতে নিজের প্রথম অর্ধশতকা। শেষ ওভারে ফিরিছেন সেই ৫০ রান নিয়েই।
জয়নিউজ/শহীদ