দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি ও উন্নয়নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবনা’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ২৫ আগস্ট সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়।
চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম. এ. লতিফ, চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর ও পরিচালক মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) বক্তব্য রাখেন।
অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালকবৃন্দ এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), অঞ্জন শেখর দাশ, মোঃ শাহরিয়ার জাহান, সাকিফ আহমেদ সালাম, মোঃ ইফতেখার ফয়সাল, এস. এম. তাহসিন জোনায়েদ, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম ও তানভীর মোস্তফা চৌধুরী, আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ কৃষ্ণ কুমার দত্ত এবং ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি এম. এ. লতিফ এমপি বলেন-১৫ আগস্ট প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে আসে এবং জাতি হিসেবে আমরা লজ্জায় অবনত হই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতা-মাতা পরিবার হারানোর ব্যথা দমিয়ে রেখে তাঁর দক্ষতা ও গতিশীলতার মাধ্যমে নেতৃত্ব শূণ্য অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে পৃথিবীর বুকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যা তাঁর ধৈর্য্য ও একাগ্রতার কারণে সম্ভব হয়েছে এবং সবক্ষেত্রে তিনি সফলতা অর্জন করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগামী দিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আধুনিক বিশ্বের ন্যায় প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষিত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে মাল্টিমিডিয়া ও কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বৈদেশিক সাহায্য ছাড়া পদ্মা সেতু নির্মাণ, গভীর সমুদ্র বন্দর ও কর্ণফুলী টানেলের মত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ দেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করবে।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানসহ ৭৫’র শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন-স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর দেশ পরিচালনা করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বকালে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নীতিমালার মৌলিক বিষয় খুব স্বল্প সময়ে নির্দিষ্ট করা হয় যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ সময়ের বিবর্তনে আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যার কারণে তৈরিপোশাক রপ্তানি খাতে দ্বিতীয়, মৎস্য খাতে চতুর্থ স্থান, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ইত্যাদি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ এবং কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ এ অঞ্চলের যোগাযোগ খাতে যুগান্তরকারী পরিবর্তন আনবে। তিনি উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বকে সুদৃঢ় করার জন্য সবাইকে কাজ করার আহবান জানান।
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন-বঙ্গবন্ধুর প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে জনগণের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা ও আন্তরিকতার চিত্র ফুটে উঠে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালে ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তন করে পরিকল্পনা কমিশন গঠন, সংবিধান প্রণয়ন এবং উক্ত সংবিধানে মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও শিক্ষা ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত করেন এবং ৬ মাসের মধ্যে সংবিধান বাস্তবায়ন শুরু করেন। শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমির খাজনা মওকূফ করেন এবং কৃষি খাতে বৈজ্ঞানিক গবেষণার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউট স্থাপন করেন।
চেম্বার পরিচালক মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) বলেন-স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপনে চিটাগাং চেম্বার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে। তারই অংশহিসেবে চেম্বার কাপ কাবাডি টুর্নামেন্ট ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।অনুষ্ঠানে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে প্রাইজবন্ড, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই এবং সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।
প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে মোঃ এমরান হোসেন, শিউলি আকতার ও মুহাম্মদ সালমান ফার্সি এবং কলেজ পর্যায়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে সুমাইয়া বিন্তে ইদ্রিস, নাদিয়া সুলতানা ও জোহরা নাসরিন (কায়েনাত)।
জেএন/এফও/কেকে