দেশের ১৯টি বেসরকারি আইসিডি (ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) কন্টেইনার হ্যান্ডলিং চার্জ কমিয়েছে বেসরকারি ইনল্যান্ড কন্টেইনার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা)।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে বিকডা।
সার্কুলার অনুযায়ী, বর্ধিত চার্জ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ কমানো হয়। এর আগে ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর গত ৬ আগস্ট থেকে আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ৩৫ শতাংশ চার্জ বাড়ানো হয়েছিল। এখন কমিয়ে তা ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। যা ৩০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে বলে সার্কুলারে জানানো হয়।
সরকার ডিজেলের দাম কমানোয় খরচ কমে যাওয়ায় বিকডা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিকডা প্রেসিডেন্ট নুরুল কাইয়ুম খান। তিনি বলেন, আমদানি ও রপ্তানিবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিংসহ পাঁচ ধরনের পরিষেবার চার্জ কমানো হয়েছে।
বিকডা সূত্রে জানা যায়, সরকার সোমবার (২৯ আগস্ট) ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে পাঁচ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়। এর পরের দিন মঙ্গলবার বিকডার সদস্যরা একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে তাদের চার্জ কমানোর সিদ্ধান্ত নেন।
বিকডার সার্কুলার অনুযায়ী, ২০ ফুট কন্টেইনারের জন্য আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং প্যাকেজ যা আগে ৬ আগস্টের আগে ৯ হাজার ৭৫৪ টাকা ছিল। গত ৬ আগস্ট থেকে তা বাড়িয়ে ১৩ হাজার ৮০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছিল। এখন তা ১২ হাজার ৬০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে ৪০ ফুট কন্টেইনারের জন্য প্যাকেজ চার্জ পূর্বের ১১ হাজার ২৫৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে গত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ হাজার ১০৭ টাকা করা হয়েছিল। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী এখন থেকে তা ১৪ হাজার ৫৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, খালি কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে জন্য শুল্ক আগের ২৪ শতাংশ বৃদ্ধির বিপরীতে নতুন ঘোষণা অনুযায়ী ২০ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে। আবার রপ্তানি কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ২৫ শতাংশ বাড়ানোর আগের সিদ্ধান্তের বিপরীতে ৩০ আগস্ট থেকে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো হবে।
বিকডা প্রেসিডেন্ট নুরুল কাইয়ুম বলেছেন, বেসরকারি ডিপোগুলোর কাজ ডিজেলচালিত যন্ত্র নির্ভর। ডিজেল-চালিত যান্ত্রিক পরিষেবার ক্ষেত্রে গত ৬ আগস্ট থেকে যে চার্জ বাড়ানো হয়েছিল, সরকার ডিজেলের দাম কমানোর কারণে আজকের বৈঠকে আনুপাতিক হারে এ ধরনের পরিষেবাগুলোর ক্ষেত্রে চার্জ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঘোষিত চার্জ ৩০ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এতে আমদানি রপ্তানির খরচ কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
দেশের সমুদ্র পথে আমদানি ও রপ্তানির ৯২ শতাংশ হ্যান্ডলিং হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। এরই মধ্যে রপ্তানি পণ্যের শতভাগ এবং আমদানি পণ্যের ২৩ শতাংশ বন্দরের আশপাশে গড়ে ওঠা ১৯টি বেসরকারি ডিপোর মাধ্যমে হ্যান্ডলিং করা হয়। এসব ডিপোর সম্মিলিত কনটেইনার ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৮০ হাজার টিইইউ’র। সব ধরনের রপ্তানি পণ্যের পাশাপাশি ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং করে ডিপোগুলো।
সাধারণত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যানে রপ্তানি পণ্য ডিপোতে এনে কনটেইনার বোঝাই (স্টাফিং) করা হয়। এরপর শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষে ট্রেইলারে কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় জাহাজীকরণের জন্য। একইভাবে অনেক আমদানিকারক তাদের পণ্য সরাসরি বন্দর থেকে ডেলিভারি না নিয়ে বেসরকারি ডিপোতে এনে রাখেন। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী তারা সেই পণ্য ডেলিভারি নেন। কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাবদ একটি নির্দিষ্ট চার্জ আদায় করে থাকে ডিপো কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে কনটেইনারের চাপ কমাতে ৯০ দশকের দিকে বেসরকারি ডিপোগুলোকে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে এগুলোকে নীতিমালার আওতায় আনা হয়। গত বছর নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।
জেএন/কেকে