তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে পরাজিত হওয়ার পর তৃতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়ে ম্যাচ জয় করল জিম্বাবুয়ে। অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১৪১ রান অলআউট করে দেয় সফরকারীরা। তারপর তিন উইকেটের জয় পায় জিম্বাবুয়ে।
টাউন্সভিলে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে আগে ব্যাটিংয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানায় জিম্বাবুয়ে। শুরুতেই অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরেন জিম্বাবুয়ের পেসাররা। পঞ্চম ওভারে ৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১১ বলে ৫ রান করে রিচার্ড গারাভার বলে আউট হন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ।
অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডারের পরের চার ব্যাটারও এক অঙ্কের ঘরেই আউট হন। স্টিভেন স্মিথকে এলবিডব্লিউ করেন ভিক্টর নিয়াচি। স্মিথ করেন ৬ বলে ১ রান। অ্যালেক্স ক্যারি ও মার্কাস স্টয়নিস দুইজনেই ব্রাড এভান্সের বলে রেগিস চাকাবভার তালুবন্দী হন। ক্যারি ৯ বলে ৪ রান ও স্টয়নিস ১৫ বলে ৩ রান করে বিদায় নেন। ক্যামেরন গ্রীনকে (৩) শিকার করে পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটান শেন উইলিয়ামস।
৭২ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখতে দেখতেই এক প্রান্ত আগলে রেখে আক্রমণাত্মক অর্ধশতক তুলে নেন ডেভিড ওয়ার্নার। ষষ্ঠ উইকেটে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে চাপ সামাল চেষ্টা চালান ওয়ার্নার। তারা গড়েন ৫৭ রানের জুটি যেখানে ম্যাক্সওয়েলের অবদান ছিল ২২ বলে ১৯ রান। ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন রায়ান বার্ল।
অস্ট্রেলিয়ার শেষ পাঁচটি উইকেটই শিকার করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট পাওয়ার স্বাদ পান বার্ল। এক প্রান্ত আগলে রাখা ওয়ার্নারকেও শতক বঞ্চিত করেন এই স্পিনার। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে ওয়ার্নার যখন সাজঘরে ফেরেন তখন অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১৩৫ রান। পরের ওভারে এসেই ১৪১ রানে অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করেন বার্ল।
৩১ ওভারে ১৪১ রান করে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার একাই লড়াই করার পথে সংগ্রহ করেন ৯৪ রান। এই ওপেনারের ৯৬ বলের ইনিংসে ছিল ১৪টি চার ও দুইটি ছক্কা। জিম্বাবুয়ের পক্ষে বার্ল পাঁচটি, এভান্স দুইটি এবং গারাভা ও নিয়াচি একটি করে উইকেট নেন।
স্বল্প লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দাপুটে সূচনার আভাস দেন টি কাইটানো ও টি মারুমানি। বাউন্ডারি হাঁকানোর পাল্লা দেন দুইজন। তবে তাদের জুটিকে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেননি জস হ্যাজলউড। কাইটানোকে শিকার করে প্রথম উইকেটটি নেন তিনি। পরের ওভারেই টানা দুই বলে ওয়েসলে মাধিভেরে ও উইলিয়ামসকে শিকার করেন হ্যাজলউড। ৪৪ রানে তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের মতোই শেষ ম্যাচেও ব্যর্থ হন সিকান্দার রাজা। ১৯ বলে ৮ রান করে মার্কাস স্টয়নিসের বলে থার্ডম্যানে তালুবন্দী হন তিনি। ৬৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ক্যামেরন গ্রীনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ত্রিশ গজেই তালুবন্দী হয়ে চাপ আরও বাড়িয়ে দেন মারুমানি। তিনি খেলেন ৪৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংস।
তারপর জিম্বাবুয়েকে জয়ের পথে রাখেন চাকাবভা ও টনি মুনিয়োঙ্গা। তবে তাদের ৩৮ রানের জুটি ভেঙে আবারও জিম্বাবুয়ের মনে ভয়ের শঙ্কা ঢুকিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ৪০ বলে ১৭ রান করা টনিকে বোল্ড করেন অ্যাস্টন অ্যাগার। জয় থেকে ২৭ রান দূরে থাকতে ষষ্ঠ উইকেটটি হারায় জিম্বাবুয়ে।
দলকে জয়ের বন্দরে রেখে বিদায় নেন বার্ল। একটি ছক্কায় ১৭ বলে ১১ রান করে বার্ল যখন মাঠ ছাড়েন, তখন জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের দরকার আর পাঁচ রান। তবে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক চাকাবভা। তিন উইকেট ও ৬৬ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতল জিম্বাবুয়ে।
জেএন/কেকে