বাংলাদেশের তৈরি কন্টেইনার জাহাজ যুক্তরাজ্যে রপ্তানি

বাংলাদেশের তৈরি আরও একটি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজ যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করা হলো। দেশীয় আনন্দ শিপইয়ার্ডের তৈরি ৬ হাজার ১০০ টন ধারন ক্ষমতার জাহাজটি কিনেছে যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান এনজিয়ান শিপিং কোম্পানি লিমিটেড। জাহাজটি রপ্তানি করে ১০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে বাংলাদেশ।

- Advertisement -

মঙ্গলবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

- Advertisement -google news follower

আনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাহাজটি ৩৬৪ ফুট লম্বা, প্রস্থে ৫৪ ফুট ও গভীরতা ২৭ ফুট। জাহাজটির ইঞ্জিনের ক্ষমতা ৪১৩০ হর্স পাওয়ার, গতি ১২.৫ নটিক্যাল মাইল ও ধারণ ক্ষমতা ৬১০০ টন। এটি কন্টেইনার, ভারী স্টিলের কয়েল, খাদ্যশস্য, কাঠ, পাশাপাশি বিপজ্জনক মালামাল বহন করতে পারে। বাল্টিক সমুদ্রে সম্পুর্ণ বরফ আচ্ছাদিত অবস্থায় ৪ ফুট বরফের পানিতে চলতে পারবে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি অত্যাধুনিক মাল্টিপারপাস কন্টেইনার জাহাজ যুক্তরাজ্যে রপ্তানি করলো। এটা আমাদের গর্বের দিন। এই রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বড় ভূমিকা রাখবে। আমারা প্রত্যাশা করছি ভবিষ্যতে এ শিল্পটি তৈরি পোশাক শিল্পের কাছাকাছি রপ্তানি আয় অর্জন করতে পারবে।

- Advertisement -islamibank

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সমুদ্র সীমা জয় করলেও আমরা সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগাতে পারিনি। এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। সম্ভাবনাময় এ খাত এগিয়ে নেওয়া জরুরি। তিনি জানান, সরকার এর উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। চট্টগ্রাম, মাতারবাড়ী, মংলা, পায়রাসহ সব বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ বারী বলেন, আনন্দ শিপইয়ার্ড ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সোনারগাঁওয়ের মেঘনাঘাটে আর্ন্তজাতিকমানের জাহাজ নির্মাণ করছে। ইয়ার্ডের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩০ হাজার টন লোহা নির্মাণে ব্যবহৃত জাহাজ। এ দেশে আধুনিক জাহাজ নির্মাণের কলাকৌশল ও পদ্ধতি আমরা প্রচলন, পরিচিত ও প্রসারিত করেছে।

তিনি বলেন, সরকার জাহাজ নির্মাণ শিল্পখাতকে থ্রাস্ট সেক্টর ঘোষণা করে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করছে। বিশেষ সুবিধাদি প্রদান করছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি জাহাজ নির্মাণখাত বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষ বৃহৎ এক্সপোর্ট বাসকেটে পরিণত হবে।

উল্লেখ্য, আনন্দ শিপইয়ার্ড এখন পর্যন্ত ৩৫৬টি জলযান নির্মাণ করে দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের নিকট সরবরাহ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালে ডেনমার্কে অত্যাধুনিক কন্টেইনার জাহাজ ‘স্টেলা মেরিস’ রপ্তানির মধ্য দিয়ে বংলাদেশের জন্য জাহাজ রপ্তানি উন্মোচন করে ও বাংলাদেশ জাহাজ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি পায়। প্রতিষ্ঠানটি ডেনমার্ক, জার্মান, নরওয়ে ও মোজাম্বিকসহ বিভিন্ন দেশে জাহাজ রপ্তানি করছে। আনন্দ শিপইয়ার্ডে একসঙ্গে ৮টি ১০ হাজার টন ক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজ নির্মাণের ভৌত সুবিধা আছে। একই সঙ্গে ইয়ার্ডটি অন্যান্য অনেক ছোট আকারের নৌযান তৈরি করতে পারে এবং নিয়মিত করছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আনন্দ শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা বারী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি) হোসেন আহমেদ, নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর নিজামুল হক, ইসলামী ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মনিরুল মওলা বক্তব্য রাখেন।

জেএন/কেকে

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM