চার বছর আগে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন স্বামী। দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর ঘরে দিন পার করছেন ওই বিধবা নারী। এরই মধ্যে তার উপর নজর পড়ে দেবর মিটন দাসের। সুযোগ বুঝে জোর করে একাধিক বার ধর্ষণ করে সে। বিষয়টি স্থানীয় সর্দারদের জানান ধর্ষিতা ওই নারী। গ্রামের সর্দারের নেতৃত্বে সালিশের জন্য করা হয় ১১ জনের কমিটি।
সোমবার (২২ অক্টোবর) গভীর রাত পর্যন্ত জেলেপাড়ার মন্দিরে সামনে চলে বিচারকাজ। এসময় এলাকার কয়েকশ’ নারী-পুরুষ উপস্থিত হয়। সালিশে কমিটি সিদ্ধান্ত দেয়, ধর্ষণকারী মিটন দাস বিয়ে করতে হবে ওই নারীকে। ধর্ষণকারীও মেনে নেয় বিচার। ঘটনাটি ঘটেছে সীতাকুণ্ডের ছলিমপুর ইউনিয়নের জেলেপাড়ায়।
ছলিমপুর জেলেপাড়ার সর্দার স্বপন দাস বলেন, এলাকার বিধবা ওই নারীকে ইজ্জহানি করে দেবর মিটন রায়। ওই নারী বিষয়টি সমাজের সর্দারকে জানালে আমরা ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করি। যাতে আমার সঙ্গে ছিলেন হরিলাল, সন্ধ্যা মোহন, ননাবালী, মনাদাস, তপন দাস, পরিমল, ক্ষুদিরাম, রামকৃঞ্চ, গুরাবাসশী ও বৈছন দাস।
তিনি বলেন, জেলেপাড়ার মন্দিরের সামনে স্থানীয়দের উপস্থিততে বৈঠকে ওই নারীকে বিনা শর্তে বিয়ে করতে মিটন রায়কে বলা হয়। মিটনও বিষয়টি মেনে নেয়। বৈঠকে একটি অঙ্গীকারনামা করা হয়। ওই নারী, মিটন এবং কমিটির সদস্যরা সালিশনামায় স্বাক্ষর করেন।
এদিকে সালিশে বিয়ে করার রায় দেওয়া হলেও কখন তা আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হবে তা জানাননি সালিশকারীরা।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তাকিম আরজু জয়নিউজকে বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে জেলেপাড়ার সর্দাররা আমাকে জানায়নি।
তিনি বলেন, ধর্ষণের বিচার সামাজিকভাবে করা যায় না।
স্থানীয় জেলেরা জানায়, বিধবা ওই নারী থানায় মামলা করার জন্য কয়েকবার চেষ্টা করলেও সমাজের সর্দাররা তাকে মামলা করতে দেয়নি। ওই নারীকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত দিয়ে মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে ধর্ষক মিটন দাসকে।
ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ শামশুল আলম বলেন, সর্দাররা আমার কথা অমান্য করে সালিশি বৈঠকে বিচার করেছে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আফজাল হোসেন জয়নিউজকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জয়নিউজ