চট্টগ্রাম নগর জুড়ে এখন তারের জঞ্জাল। বিদ্যুতের খুঁটিতে জালের মতো জট পাকিয়ে আছে তার। তারগুলো কোন সংস্থার, কোন কাজের, সাধারণভাবে তা বোঝার উপায় নেই। প্রায় সময় এ তারগুলো থেকে শর্ট খেয়ে অগ্নিকা-ের ঘটনাও ঘটে। নগরবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো সময় শহরে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম শহরকে তারের জঞ্জাল থেকে মুক্ত করতে বিদ্যুৎ লাইন মাটির নিচে নেওয়ার একটি সিদ্ধান্ত হয়েছিল। প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরে সবচেয়ে বেশি তারের জঞ্জাল চোখে পড়ে আন্দরকিল্লাহ, টেরিবাজার, জামালখান, চকবাজার, বহদ্দরহাট, আগ্রাবাদ, ষোলশহর, কাজীর দেউরী, ষোলশহর, মুহাম্মদনগর, বাদুরতলা, ষ্টেশন রোড়, নিউ মার্কেট, মুরাদপুর, হালিশহর বড়পুল, চৌমহনী, পতেঙ্গা ষ্ট্রিল মিলস, বন্দর, বারেক বিল্ডিং, দেওয়ানহাট, দিদার মার্কেট, পাহাড়তলী, আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ এলাকা, সদরঘাট, জিইসি মোড়, ষোলশহর দুই নম্বর গেইটসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কটি এলাকার সড়কের পাশে থাকা বিদ্যুতের খুঁটিতে।
বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম মহানগরের মূল সড়ক ও আশে-পাশের অভ্যন্তরীণ সড়কের পাশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থার অফিস রয়েছে। সড়কের বিদ্যুতের খুঁটির মাধ্যমে এসব অফিসে ইন্টারনেট লাইন, কেব্ল লাইন, টেলিফোন সংযোগের তার টানা হয়েছে। আর অলিগলিতে ইন্টারনেটের তারের সঙ্গে আছে কেব্ল সংযোগের তার। ব্যস্ত এলাকাগুলোয় জালের মতো ঝোলানো অসংখ্য তার ও তারের কয়েল।
আন্দরকিল্লাহ এলাকার ব্যবসায়ী আখতার উদ্দিন রানা বলেন, দোকানের সামনে প্রায় সময় ডিশ লাইন, ইন্টারনেটের লাইনের তার ঝুলে থাকে। কারও চোখে-মুখে লাগে। অনেক সময় মাটিতে পড়ে থাকে। কারও পায়ে লাগে। এক অস্বস্থিতে আছি।
আগ্রাবাদের বড়পুল এলাকার বাসিন্দা আকমল হোসেন বলেন, কোটি টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছি। বাসার সামনে দিয়ে গেছে ৯টি কোম্পানীর কয়েকশত বিশৃঙ্খল অবস্থায় তার। দেখতেও অসুন্দর লাগে। তারগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে আনা দরকার।
গত আগষ্ট মাসে কাজীর দেউরি এলাকায় বৈদ্যুতিক খুটি থেকে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। এতে এ্যাপোলো শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেটে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। চলতি মাসে আন্দরকিল্লাহ মোড়ে বৈদ্যুতিক লাইন থেকে আগুন ধরে যায়। প্রতিদিন নগরের কোন না কোন জায়গায় এভাবে আগুনের ঘটনা ঘটছে। ফলে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
ডিশের ফিড লাইন টেকনিশিয়ান জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব বা নির্দিষ্ট খুঁটি নেই, তাই বাধ্য হয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে আমাদের কেব্ল স্থাপন করতে হয়। যদিও এভাবে ব্যবহার করা ঠিক না, তারপরও আমাদের করতে হচ্ছে।’
একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘বিদ্যুতের প্রতিটি পিলারে অতিরিক্ত তারে জঞ্জালের সৃষ্টি হয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো লাইন থাকায় আবর্জনার মতো লাগে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিত এই তারের জঞ্জাল কমানো।’
জেএন/এফও/কেকে