নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলছে সিএনজি অটোরিকশা। ট্রাফিক পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে গাড়িগুলো চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।
সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক লাগোয়া অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে সিএনজি অটোরিকশা চলাচলের রুট নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে আগেই। কিন্তু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সে সবের বালাই নেই। সমস্ত রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায় অটোরিকশা। প্রশাসন এই ব্যাপারে যথেষ্ট নজরদারি করছে না বলে অভিযোগ তুলে আসছিলেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন (নিপসা)।
তাঁদের দাবি, চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে সিংহভাগ দুর্ঘটনার কারণ সিএনজি অটোরিকশা। সম্প্রতি মহাসড়কের পটিয়া অংশে ৬ সিএনজি অটোরিকশা যাত্রী মারা যান দুর্ঘটনায়। একটি বাস তাদের পিসে দিলে এ হতের ঘটনা ঘটে। প্রতিদিন দু’একটা দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে অটোরিকশাগুলো। যে কোনও সময়ে সিএনজি অটোরিকশার জন্য ব্যস্ত সড়কে আরো দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পটিয়া, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, দোহাজারি,সাতকানিয়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও লিংক রোডগুলোতে রমরমিয়ে চলছে সিএনজি অটোরিকশা। এতে যেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে, তেমনই মহাসড়কে সড়কে যানজটও বাড়ছে।
বিআরটিসি সূত্র জানায়, গ্রাম অঞ্চলে প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে।
একই অবস্থা উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলায়। প্রধান সড়কগুলোতে দ্রুতগামী বাস, ট্রাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে সিএনজি অটোরিকশা। এতে দুর্ঘটনা অনেকাংশে বাড়ছে।
গত দুই বছর আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে বেআইনি সিএনজি অটোরিকশা চলাচল রুখতে অভিযানে নামেন সংশ্লিষ্ট থানা প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশ।
সিএনজি অটোরিকশা চালকদের চালকদের দাবি, মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশার চাহিদা রয়েছে। অথচ প্রশাসন কোনও রুট নির্দিষ্ট না করে দেওয়াতেই সমস্যা হচ্ছে।
গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা চালকরা বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে চলাচল করা গ্রাম সিএনজি অটোরিকশাগুলোর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ওই সিএনজি অটোরিকশাগুলোর চলাচলের জন্য বৈধ অনুমতি নিতে হবে।
শহরের মধ্যে চলাচল করার অনুমতি দিলেও কোনও ভাবেই হাইওয়েতে অটোরিকশা চলাচল মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘হাইওয়েতে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এটা নিয়ম বিরুদ্ধও। ট্রাফিক প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি যাতে এই ব্যাপারে হাইওয়েতে নজরদারি চালানো হয়।’
একাধিক ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, ‘‘হাইওয়েতে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল রুখতে আমরা নজরদারি চালাচ্ছি।’’
সিএনজিরচালকদের একাংশের দাবি, ‘‘প্রশাসন আমাদের শহরের ভিতরে ঢোকার অনুমতি না দেওয়ায় ব্যবসা মার খাচ্ছে। তাই হাইওয়েতে ভাড়া পেলে চলে যাই।’’
আর সাধারণ যাত্রীদের বক্তব্য, অল্প দূরত্বের যাত্রীদের গণপরিবহনগুলো নিতে চায় না। তাই বাধ্য হয়েই সিএনজি অটোরিকশায় চড়তে হচ্ছে।
জেএন/এফও/কেকে