ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ঢাকায় প্রচুর মানুষ ডাব খেয়ে থাকে, এগুলো অনেক সময় পরিষ্কার করা হয় না। এতে এডিস মশার প্রকোপ বাড়ে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আমাদের কাজ নয়, আমরা সেবা দিয়ে থাকি।
স্বাস্থ্য সচিব আরও বলেন, হয়তো সবসময় সবকিছু হয় না, কিন্তু চেষ্টা করা হয়। তবে সবাইকে (ডেঙ্গু) প্রতিরোধের কাজটা করতে হবে। এ জন্য আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। প্রথম দিকে যদি চিহ্নিত করা যায়, তাহলে চিকিৎসা দেওয়া অনেক সহজ হয়৷
আনোয়ার হোসেন হাওলাদার আরও বলেন, এখনও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নিয়মিত বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে, ফলে এডিস মশার জন্ম হয়। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে যেন, নিজ বাসাতেই মশার উৎপাদন না হয়। ডাম্পিং স্টেশনগুলোতে নজর দিতে হবে। ২০১৯ সালে যে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা বলার মতো নয়। সিটি করপোরেশনকে অনেক দৌড়াতে হয়েছে। এজন্য আমাদের নিজেদের সচেতনতার বিকল্প নেই। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলোর বাগানের ছাদে যাতে পানি না জমে, কমিউনিটির সেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, কোনো মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। ভর্তির প্রয়োজন না হলেও অনেকে হচ্ছেন। কিন্তু পুরো কাজের জন্য জনবল ও অর্থ লাগে। কোভিডকালীন যেসব রোগীকে আমরা সেবা দিতে পারিনি, তারা এখন বেশি আসছেন। ফলে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জের হয়ে পড়ছে। কোভিড এখনও শেষ হয়নি। এখন আবার ডেঙ্গু। আমরা সীমিত জনবল দিয়ে চেষ্টা করছি। সচেতনতাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
সংবাদ সম্মেলনে জরিপের তথ্য উপস্থাপন করে অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৩টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৪টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুতে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। ডিএনসিসির ৪০ ওয়ার্ডে ৪৮টি সাইট এবং ডিএসসিসির ৫৮টি ওয়ার্ডে ৬২টি সাইটসহ মোট ১১০টি সাইটে তিন হাজার ১৫০টি বাড়িতে জরিপ চালানো হয়েছে। ২১টি টিমের মাধ্যমে ১০ দিনব্যাপী জরিপটি চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
জরিপের ফলে দেখা গেছে, তিন হাজার ১৫০টি বাড়ির মধ্যে ২ হাজার ৮২৯টির নমুনা পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ এসেছে। ১৫৯টি বাড়িতে ফল পজিটিভ এসেছে। মোট পজিটিভ আসা বাড়িগুলোর মধ্যে ৬৩টি ডিএনসিসিতে এবং ৯৬টি ডিএসসিসিতে অবস্থিত।
জেএন/কেকে