কোর্টে আর দেখা যাবে না টেনিস তারকা রজার ফেডেরারকে। ২৪ বছরের কেরিয়ারের শেষদিনে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না রজার। ম্যাচ শেষ করে সঞ্চালকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে অঝোরে কাঁদলেন টেনিসের রাজা।
কখনও স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে, কখনও সন্তানদের কাছে টেনে নিয়ে, কখনও সতীর্থদের আলিঙ্গন করে। তিনি কাঁদলেন, সেই সঙ্গে কাঁদল গোটা টেনিস বিশ্ব।
ফেডেক্সের বিদায়ের জন্য লেভার কাপের আয়োজকরা বেশ কিছু বন্দোবস্ত রেখেছিলেন। ফেডেরার এদিন নেমেছিলেন একসময়ের প্রধান প্রতিপক্ষ রাফায়েল নাদালকে সঙ্গী করে।
গ্যালারিতে বসে নোভাক জকোভিচ, অ্যান্ডি মারেরা। প্রতিপক্ষ ছিল ফ্রান্সেস টিয়াফো এবং জ্যাক সফ জুটি। দীর্ঘদিন বাদে চোট সারিয়ে ফেরা নাদাল এবং ফেডেরার জুটি এদিন জিততে পারেনি। প্রথম সেটে ৬-৪ পয়েন্টে জিতেও ম্যাচ জেতা হয়নি।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষেও হারতে হয়েছে ৬-৪, ৬-৭, ৯-১১ ব্যাবধানে। তবে এই ম্যাচের ফলাফল হয়তো সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ নয়। ফেডেরার এদিন হারলেন, নাকি জিতলেন সেটা হয়তো কেউ দেখতে আসেননি। সবাই দেখতে এসেছিলেন ফেডেরারকে।
শেষবারের মতো টেনিসের রাজাকে কোর্টে রাজত্ব করতে দেখতে। আরও একবার টেনিস নামক খেলাটিকে শিল্প হয়ে যেতে দেখতে। দর্শকদের সেই প্রত্যাশা এদিন পূরণ হয়েছে।
খেলা চলাকালীনই ফেডেক্স ভক্তদের অনেকের চোখে জল দেখা যাচ্ছিল। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যে বড় কঠিন কাজ। রজার নিজে অবশ্য নিজেকে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে আর পারলেন না।
সঞ্চালকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অঝোরে কেঁদে ফেললেন। জড়িয়ে ধরলেন স্ত্রীকে। তারপর সন্তানদের। ধীরে ধীরে এগিয়ে এলেন নাদাল, জকোভিচরা।
ফেডেক্স তবু কেঁদেই চলেছেন। রাজার বিদায়ে তাঁরাও যেন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না। চোখ ভিজে আসছিল তাঁদের। শেষ পর্যন্ত ফেডেক্সকে কাঁধে বসিয়ে রাজার মতোই বিদায় দিলেন তাঁরা।
শেষে কোনওক্রমে চোখের জল মুছে ফেডারার বললেন, “এতবছর যারা আমার পাশে ছিলেন তাঁদের ধন্যবাদ। যারা এতবছর ধরে আমার সঙ্গে গোটা বিশ্ব ঘুরেছে, তাদের ধন্যবাদ। আমার সতীর্থ, আমার প্রতিপক্ষ, সবাইকে ধন্যবাদ। আমার বিদায়ে যেন একটা উৎসব হচ্ছে। এটাই তো চেয়েছিলাম।”
বিদায়বেলায় ফেডেক্স একা হননি ঠিকই, কিন্তু তাঁকে ছাড়া গোটা টেনিস বিশ্ব যেন একা হয়ে গেল।
জেএন/পিআর