যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত যে আরেকটু হলে জয়টা ছিনিয়েই নিয়ে যাচ্ছিল! শেষমেশ সেটা হয়নি, তাই বাঁচোয়া! ৭ রানের জয় দিয়ে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছে সফরকারীরা।
আমিরাতের বিপক্ষে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টসটা যে গুরুত্বপূর্ণ, একটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর সবশেষ এশিয়া কাপ দেখে থাকলে তা ভালোভাবেই মনে থাকার কথা আপনার। সেই গুরুত্বপূর্ণ টসটায় আজ হেরেছে বাংলাদেশ। সেখানে টস জিতলে সবসময় যা হয়, আমিরাত অধিনায়ক রিজওয়ান তাই করেছেন, নিয়েছেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল যাচ্ছেতাই। সাবির আলির করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ক্যাচ তুলে দেন সাব্বির। ফেরার আগে তিন বল খেলে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।
এরপর লিটন দাস এসে পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। নিজের খেলা দ্বিতীয় বৈধ বলেই হাঁকিয়েছিলেন চার। এরপরের ওভারে মারলেন আরও দুটো। তাতে বাংলাদেশও দারুণ শুরুর আভাসই পাচ্ছিল বৈকি!
তবে সে সুখ বেশিক্ষণ টিকল না সফরকারীদের। আয়ান আফজাল খানের করা সেই ওভারেই তিনি টাইমিংয়ের গড়বড়ে ক্যাচ তুলে দেন জুনাইদ সিদ্দিকের হাতে। লিটন ফেরেন ৮ বলে ১৩ রান করে। বাংলাদেশ ২৬ রানে খুইয়ে বসে তাদের দ্বিতীয় উইকেট।
পাওয়ারপ্লেতে এরপর ওপেনার মিরাজকেও খুইয়ে বসে বাংলাদেশ। পাওয়ারপ্লে পেরোতে ফিরলেন ইয়াসির আলীও।
এশিয়া কাপে দারুণ ব্যাট করা মোসাদ্দেক যখন ফিরলেন ৮ বলে ৩ রান করে, তখন বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে রান মোটে ৭৭, ওভার পেরিয়ে গেছে ১১টা।
এরপরই শুরু হলো আফিফ-নুরুলের জুটি। ৫৪ বলে দুজন মিলে করলেন ৮১ রান। তাতেই শুরুর শঙ্কা কাটিয়ে বাংলাদেশ পেল ১৫৮ রানের পুঁজি।
দুবাই স্টেডিয়ামে ১৫৮ রানের পুঁজি কম কিছুই, সঙ্গে যখন যোগ হয় শেষ ইনিংসে শিশিরের উপদ্রব, তখন তা কম মনে হতে পারে আরও। এই দুই ফ্যাক্টর জয় করতে হলে যা করতে হতো বাংলাদেশকে, শুরুর ছয় ওভারে অন্তত তেমন কিছু করতে পারেনি নুরুল হাসানের দল।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শরিফুল ইসলামের আঘাত বাদ দিলে পাওয়ারপ্লেতে তেমন কিছুই করতে পারেনি বাংলাদেশ। ছয় ওভার শেষে ১ উইকেট খুইয়ে স্বাগতিকরা তুলে ফেলে ৪৩ রান। এ রান অবশ্য পাওয়ারপ্লে শেষে সফরকারীদেরও ছিল, তবে তা ছিল ৩ উইকেটের বিনিময়ে।
এরপর বিপদজনক হয়ে উঠতে থাকা চিরাগ সুরিকে ফেরান মিরাজ। পরের ওভারে আরিয়ান লাকরাকেও। তবে স্বাগতিকদের রানের চাকায় লাগাম পরানো যাচ্ছিল না কিছুতেই। দশ ওভার শেষে তিন উইকেট খুইয়ে দলটি তুলে ফেলে ৭৯ রান। জয় থেকে দলটা তখন কেবল ৮০ রানের দূরত্বে।
তবে এরপরই আমিরাতের ইনিংসে রাহুর গ্রহণের শুরু। ৭৭ রানে ৩ উইকেট খোয়ানো স্বাগতিকরা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খুইয়ে ১০২ রান তুলতেই হারায় ৭ উইকেট, ১২৪ রানে খোয়ায় আরও এক ব্যাটারকে।
আমিরাত যে সেই থেকে শেষ পর্যন্ত লড়ল, তার কৃতিত্ব আরিয়ান আফজাল খান, কার্তিক মিয়াপান আর জুনাইদ সিদ্দিকের। তিনজনের ছোট ছোট তিন ইনিংসে এক পর্যায়ে জয়টা খুব কাছেই মনে হচ্ছিল স্বাগতিকদের, বাংলাদেশ শিবির তখন হারের শঙ্কায় পুড়ছে।
শেষ ওভারে ১১ রান প্রয়োজন ছিল দলটির। প্রথম দুই বলে তিন রান তোলা আমিরাত রীতিমতো তীরের দেখাই পেয়ে গিয়েছিল, আরিয়ান যে টিকে ছিলেন তখনো! তবে স্বাগতিকদের তরীটা ডুবল এরপরই। শরিফুল ফেরালেন আরিয়ানকে, পরের বলে তুলে নিলেন জুনাইদকেও। তাতেই আমিরাতকে হতাশায় ডুবিয়ে ৭ রানের কষ্টার্জিত জয়টা তুলে নেয় বাংলাদেশ।
জেএন/এও