সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে ১৮২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ১৬৯ জন মারা গেছেন, যা মোট নিহতের ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি আকারে পাঠানো হয়েছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসেবে, গেল সেপ্টেম্বরে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০৭টি। এসব দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত এবং ৭৯৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে আছেন ৬২নারী ও ৭৭ শিশু। একই সময়ে নয়টি নৌ দুর্ঘটনায় ৭৮ জন নিহত এবং ৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। আর রেলপথে ২১টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় গত আগস্ট মাসে ৫১৯ জন নিহত হয়েছিল। গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছিল ১৬ দশমিক ৭৪ জন। সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিদিন নিহত হয়েছে ১৫ দশমিক ৮৬ জন। এই হিসেবে সেপ্টেম্বর মাসে প্রাণহানি কমেছে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে প্রাণহানি হ্রাসের এই মাত্রা কোনো টেকসই উন্নতির সূচক নির্দেশ করছে না।
দুর্ঘটনায় দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬২ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শিক্ষক নিহত হয়েছেন ১৪ জন। দুর্ঘটনায় ১৯ থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন ৩৮৪ জন, অর্থাৎ ৮০.৬৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেল-ট্র্যাকে দুর্ঘটনা বাড়ছে। ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও কমছে না। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী যানবাহন চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছে। গণপরিবহন সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা অতীব জরুরি।
আরও বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
জেএন/এফও/এও