বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই এবারের প্রথম হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন নামিবিয়ার বেন শিকোঙ্গো। শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটারকে টানা আউট করেছিলেন তিনি। শেষে দুষ্মন্তে চামিরা এসে সেদিন আর হ্যটট্রিক হতে দিলেন না। কিন্তু সেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই এবারের বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিকের গৌরব সৃষ্টি করলেন আরব আমিরাতের বোলার কার্তিক মায়াপ্পন।
১৫তম ওভারের শেষ তিন বলে ভানুকা রাজাপাকসে, চারিথ আশালঙ্কা এবং দাসুন শানাকাকে সাজঘরে ফিরিয়ে দিয়ে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব গড়লেন মায়াপ্পন।
১৪ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ২ উইকেট হারিয়ে ১১৪। বল করতে আসেন লেগ স্পিনার কার্তিক মায়াপ্পন। এটা ছিল তার তৃতীয় ওভার। প্রথম তিন বলে দিলেন তিন রান। চতুর্থ বলেই ভানুকা রাজাপাকসের উইকেট তুলে নেন তিনি। অফসাইডে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন রাজাপাকসে। প্রায় বাউন্ডারির কাছাকাছি ক্যাচ ধরেন কাশিফ দাউদ।
পরের বলেই মায়াপ্পন তুলে নেন চারিথ আশালঙ্কাকে। দুর্দান্ত এক গুগলি ছোঁড়েন মায়াপ্পন। বলে ছিল এক্সট্রা বাউন্স। বল বেরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন আশালঙ্কা। কোনো রান না করেই আউট হলেন তিনি।
হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। মাঠে নামেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। এবার পুরোপুরি বোকা বনে যান শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক। ব্যাট এবং শরীর পেতে দিয়েও বল ঠেকাতে পারলেন না। অসাধারণ এক গুগলিতে পুরোপুরি কুপোকাত শানাকা। তার ব্যাট এবং শরীর ফাঁকি দিয়ে গিয়ে স্ট্যাম্পে আঘাত হানলো বল।
সঙ্গে সঙ্গেই হ্যাটট্রিকের আনন্দে-উল্লাসে মেতে ওঠে আরব আমিরাতের ক্রিকেটাররা। এ যেন এক নতুন ইতিহাস গড়ার দিন তাদের। এ যেন নতুন করে পাওয়ার দিন তাদের। বিশ্বকাপ জিতলেও বুঝি এতটা আনন্দ আর উচ্ছ্বাস হতো না! আইসিসি সহযোগি দেশগুলোও যে ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে, এসবই তার প্রমাণ।
এ নিয়ে বিশ্বকাপে মোট ৫টি হ্যাটট্রিক হলো। ২০০৭ প্রথম বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লি। সাকিব, মাশরাফি এবং অলক কাপালিকে আউট করেছিলেন তিনি।
এরপর বিশ্বকাপে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের ঘটনা ঘটে ২০২১ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের ম্যাচে। ওই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন কার্টিস ক্যাম্পার। টানা ৪ বলে চারটি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। একই বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাদা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন। এবার আরব আমিরাতের কার্তিক মায়াপ্পন করলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
টি-টোয়েন্টিতে এ নিয়ে মোট ৩৯টি হ্যাটট্রিকের রেকর্ড হলো। এর মধ্যে আফগানিস্তানের রশিদ খান, শ্রীলঙ্কার মালিঙ্গা, আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্পার এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডার টানা চার বলে চারটি উইকেট নেন। যেটাকে ক্রিকেটীয় ভাষায় বলা হয় ডাবল হ্যাটট্রিক।
জেএন/এমআর