এ কেমন জালিয়াতি!

শীতের মৌসুমে চাহিদার শীর্ষে থাকে জ্যাকেট-জিন্সের প্যান্ট, সোয়েটার, টি-শার্ট অথবা পোলো শার্ট। চীন থেকে এসব শীতবস্ত্র আমদানি করেছে ওয়াই এস এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সাথে এনেছে তারা হেলমেটসহ মোটর সাইকেলের নানা যন্ত্রাংশ। কিন্তু এসব পণ্য যে তারা দেশে আনছে সে তথ্য গোপন করেছে কাস্টমসের কাছে।

- Advertisement -

প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছিল, চীন থেকে ইনস্যুলেটিং গ্লাসওয়্যার আমদানির কথা। ঘোষণা অনুযায়ী যে পরিমাণ ইনস্যুলেটিং গ্লাসওয়্যার আনার কথা তার শুল্ক কর ৩ লাখ টাকা। বিপরীতে আমদানি করা জ্যাকেট-জিন্সের প্যান্ট, সোয়েটার, টি-শার্ট, পোলো শাট অথবা হেলমেট, মোটর সাইকেলের যন্ত্রাংশের শুল্ক কর ৯৯ লাখ ৯ হাজার টাকা। ৩ লাখ টাকা শুল্ক কর দিয়ে প্রায় কোটি টাকা শুল্ককর যোগ্য পণ্য খালাস করতে চেয়েছিল ওয়াই এস এন্টারপ্রাইজ! কিন্তু চালানটি খালাসের আগে কায়িক পরীক্ষা করতে গিয়ে কাস্টমসের এআইআর (অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ) শাখার হাতে ধরা পড়ে। শুল্ক ফাঁকি দিতে গিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়ায় মাশুল গুণতে হল তাদের ২৫ লাখ টাকা! কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের এ জরিমানা করে।

- Advertisement -google news follower

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামান জয়নিউজকে বলেন, ওয়াই এস এন্টারপ্রাইজ চীন থেকে ইনস্যুলেটিং গ্লাসওয়্যার আনার ঘোষণা দেয় কাস্টমস হাউসকে। কিন্তু কনটেইনারের ভিতর ইনস্যুলেটিং গ্লাসওয়্যার পরিবর্তে মেলে জ্যাকেট, সোয়েটার, জিন্সের প্যান্ট, পোলো শার্ট, টি শার্ট, হেলমেট, মোটর সাইকেলের পার্ট ও এলার্ম সিস্টেম। যে পরিমাণ ইনস্যুলেটিং গ্লাসওয়্যার আমদানির ঘোষণা করা হয় তার কাস্টমস শুল্ক কর ৩ লাখ টাকা। বিপরীতে তথ্য গোপন করে আনা পণ্যগুলোর কাস্টমস শুল্ক কর ৯৯ লাখ ৯ হাজার টাকা! শুল্ক ফাঁকি দিতে গিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়ার দায়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সংক্ষিপ্ত বিচারাদেশের মাধ্যমে তাদের ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়।

এআইআর শাখার ডেপুটি কমিশনার মো. শাহীনুর কবির পাভেল জয়নিউজকে বলেন, কাস্টমস কমিশনারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এআইআর শাখা ওয়াই এস এন্টারপ্রাইজের কন্টেইনারটির পণ্য খালাস স্থগিত করে। কায়িক পরীক্ষায় দেখা যায়, ইনস্যুলেটিং গ্লাসওয়্যার ঘোষণা দিয়ে তারা বিপুল পরিমাণে তৈরি পোশাক, মোটর সাইকেল পার্টস ও এলার্ম সিস্টেম আমদানি করে। কাস্টমসের এআইআর শাখা চালানটি জব্দ করে।

- Advertisement -islamibank

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, পণ্যগুলোর খালাসের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল সিএন্ডএফ আর এম এসোসিয়েটস। সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। কায়িক পরীক্ষা শেষে ঘোষণা বহির্ভূত অতিরিক্ত পণ্য পাওয়া যায়। পণ্যগুলোর শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ৭৬ লাখ ৩১ হাজার টাকা। শুল্ক করের পরিমাণ ৯৯ লাখ ৯ হাজার টাকা। তাদের উপর আরোপিত জরিমানা ২৫ লাখ টাকা। পণ্যগুলোর শুল্ক কর, জরিমানাসহ মূল্য দাঁড়ায় ২ কোটি ৪০ হাজার টাকা। চালানটির বি/ই নং ১৫০৪২৬৫। গত ১৭ অক্টোবর চালানটি খালাসের আবেদন জানায় তারা। আবেদনের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্মকর্তারা কাজ শুরু করে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য আনার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ২৪ অক্টোবর চালানটি জব্দ করা হয়।

এ কেমন জালিয়াতি!
ইনস্যুলেটিং গ্লাসওয়্যার হলো ইন্টারনেট সংযোগে ব্যবহার করা ক্যাবল ।

এর আগে জেড আই এন্টারপ্রাইজ চীন থেকে প্যাড লক আমদানির ঘোষণা দিয়ে ডোর লক আমদানি করে। প্যাড লক আমদানির শুল্ক কর ছিল ৩৫ হাজার টাকা। ডোর লকগুলোর কাস্টমস শুল্ক কর ৩৭ লাখ টাকা। পণ্যগুলোর শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ৩৮ লাখ টাকা। শুল্ক করসহ পণ্যগুলোর মূল্য ৭৫ লাখ টাকা। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৩৬ লাখ টাকারও বেশি শুল্ক ফাঁকি দিতে গিয়ে কাস্টমসের এআইআর শাখার কর্মকর্তাদের জালে আটকা পড়ে ওই কোম্পানির পণ্যগুলো।
জয়নিউজ/অভি/আরসি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM