স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, রাজধানী ঢাকাসহ ৫০ জেলায় ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে। ডেঙ্গু এখন আশঙ্কাজনক হারে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে চিকিৎসারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালে সিটের অভাব হবে না।
আজ বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্টানিং এবং প্রতিরোধ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত সিটের ব্যবস্থা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন হলে আরও বাড়ানো হবে। তবে শুধু চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব নয়। এ জন্য সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে আরও জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও আরও সচেতন হতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১৩ হাজার নারী প্রতিবছর স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে প্রায় ৭হাজার মৃত্যুবরণ করেন। জরায়ু মুখ ক্যানসারে ৮ হাজার নারী আক্রান্ত হন, এর মধ্যে ৫ হাজার মারা যান। এ ছাড়া শনাক্তের বাইরে থাকেন অসংখ্য নারী। আমাদের দেশে ক্যানসারে ১ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। প্রতিবছর দেড় লাখ মানুষ নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। ১৫ থেকে ১৮ লাখ ক্যানসার রোগী বাংলাদেশে রয়েছে। গত তিন বছরে করোনায় যে পরিমাণ মৃত্যু হয়নি, এক বছরে ক্যানসারে তার থেকে তিন গুণ বেশি মৃত্যুবরণ করেছে। সুতরাং ক্যানসারের বিষয়ে আমাদের মনোযোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সবাই ক্যানসারের স্ক্রিনিংয়ের বিষয়ে বেশি জোর দিয়েছি। স্ক্রিনিংয়ের জন্য ৫৭০টি সেন্টার করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রাথমিক স্ক্রিনিং করা হয়। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পজিটিভ রোগীদের জন্য ৪৩টি কোলোনোস্কোপি সেন্টার করা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা এবং নির্দেশনা রয়েছে ৫০০টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ডাটা ট্রাকিং সেন্টার করার। কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রাথমিক স্ক্রিনিং করা যায় সেই নির্দেশনা আমরা দিয়েছি।
ক্যানসারের চিকিৎসা সেবা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্ক্রিনিংয়ের পরের ধাপ হলো চিকিৎসা। বাংলাদেশে এখনো ক্যানসারের চিকিৎসা ব্যবস্থা সেভাবে উন্নত হয়নি। এর ফলে অনেকে দেশের বাইরে চিকিৎসা গ্রহণ করতে যায়। আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আটটি বিভাগীয় হাসপাতালে আটটি ক্যানসার সেন্টার করার। ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে পারলে, এই রোগ থেকে শতভাগ সুস্থ হয়ে উঠার চিকিৎসা রয়েছে। আটটি বিভাগীয় ক্যানসার সেন্টারে আমরা সেই চিকিৎসা ব্যবস্থা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় মেমোগ্রাফির মেশিন দেবো। সেখানে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা আরও ভালো হবে। মেডিকেল কলেজেও ক্যানসারের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করব।
বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব রাশেদা আকতার, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যানসার নির্ণয় ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা বিস্তারিত তুলে ধরেন।
জেএন/এমআর