বিশ্বের বেশি দরিদ্রতম, উন্নয়নশীল দেশ ঋণ খেলাপি ও কার্যকরভাবে দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনটা জানিয়েছেন খোদ জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রধান আছিম স্টেইনার।
তিনি বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট ও সুদের হার বৃদ্ধি এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে যেখানে অনেক দেশই ঋণ খেলাপির ঝুঁকিতে রয়েছে। মিশরে চলা জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭-এ বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) এসব কথা বলেন ইউএনডিপি প্রধান।
স্টেইনার বলেন, ‘ঋণ খেলাপির ঝুঁকিতে রয়েছে বর্তমানে ৫৪টি দেশ রয়েছে। যদি সুদের হার, ঋণের পরিমাণ, জ্বালানি ও খাদ্যের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকে তাহলে এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে। ’
‘এতে করে একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হবে, যেমনটা হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের সঙ্গে ঋণ খেলাপির ঝুঁকি বাড়ে,’ যোগ করেন ইউএনডিপি প্রধান।
জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭ এ বক্তৃতাকালে স্টেইনার বলেন, ‘এই ধরণের ত্রুটি জলবায়ু সংকট সমাধানে আরও সমস্যা তৈরি করবে।
ঋণ পরিশোধে দরিদ্র দেশগুলোকে সাহায্য করতে হবে। এই সমস্যা এখন অনেক উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু কর্মকে ত্বরান্বিত করার জন্য এ সংকট সমাধান পূর্বশর্ত হয়ে উঠেছে। ’
জলবায়ু সংকট ঋণ খেলাপির সমস্যাটিকে আরও জটিল করে তুলছে বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাটির প্রধান। কারণ দরিদ্র দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছে।
২০০৯ সালে ধনী দেশগুলো বলেছিল, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০২০ সালের মধ্যে দরিদ্র দেশগুলোকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার করে সহায়তা দেওয়া হবে। তবে এমনটি করা হয়নি। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট বৈরি আবহাওয়ায় ভুগছে দরিদ্র দেশগুলো।
স্টেইনার সতর্ক করে বলেছেন, উন্নত দেশের সরকারগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সাহায্য না করলে কিছু উন্নয়নশীল দেশ জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনা ছেড়ে চলে যাবে। কার্বন নির্গমন কমানোর প্রচেষ্টা কমিয়ে দিতে পারে তারা।
জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের নিজস্ব পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে ইউএনডিপি প্রধান বলেন, ‘উন্নয়নশীল বিশ্ব ইতোমধ্যেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থার জন্য ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বহুগুণ বিনিয়োগ করেছে।
উন্নয়নশীল দেশগুলো কিছু করছে না, ধনী দেশের জনগণের এই অভিযোগ অসত্য।
জেএন/পিআর