চট্টগ্রামের সাপ্তাহিক বাজার দরে বলা চলে কোন সুখবর নেই চালের দামে। আগের সপ্তাহের মতোই উদ্ধগতিতে থাকা দামে চাল কিনতে হচ্ছে এ সপ্তাহেও।
মাছের বাজারেও দামে আক্শচুম্বী। তবে নগরীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে, যার প্রভাব পড়ছে দামেও। বাজারভেদে বেগুন, শিম, টমেটোর দাম প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, চালের দাম শুনে চাপে চ্যাপ্টা হচ্ছে নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। মিনিকেট নামে কোনো চাল বিক্রি করা যাবে না,সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এ কথা বলা হলেও প্রায় সব বাজারেই এই নামে চাল বিক্রি হচ্ছে। বোর্ডে তা টাঙিয়েও রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজারভেদে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭১ থেকে ৭৫ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে।
ব্রি-২৮ (মোটা চাল) প্রতি কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, চিনিগুঁড়া ১৩০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৮ থেকে ৮৪ টাকা, লাল চাল ৮০ টাকা, মোটা আতপ চাল ৪৪ টাকা, কাটারি আতপ ৭৮ থেকে ৮২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
কয়েকজন বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভারত থেকে চাল না আসায় প্রভাব পড়ছে বাজারে। তবে নতুন ধান কাটা শুরু হয়েছে, কিছুদিন পর বাজারে আসলে দাম কিছুটা কমবে।
নগরীর কাজির দেউরি বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও দাম কমছে না। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ ইলিশের নাগাল পাচ্ছে না।
বাজারভেদে দুই কেজির ইলিশ মাছ প্রতি কেজি এক হাজার ৮শ থেকে এক হাজার ৯শ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ৭শ থেকে ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮৫০ থেকে ৯শ টাকা কেজি।
এক হাজার ২শ থেকে এক হাজার ৩শ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি এক হাজার ৩শ থেকে এক হাজার ৪শ টাকা কেজি এবং ৪শ থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
এ ছাড়া আইড় প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, শোল ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া ১৮০ টাকা কেজি, মাঝারি আকারের রুই ৩০০ টাকা, বড় আকারের রুই ৫৫০ টাকা, গুঁড়া চিংড়ি ৪৫০ টাকা, কাঁচকি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তবে এ সপ্তাহের বাজারে স্বস্থির কথা হচ্ছে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ প্রচুর। দামও অনেক কমেছে। বাজারভেদে কালো গোল বেগুন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা।
পাকা টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এ ছাড়া ঢেঁড়শ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলা ২৫-৩০ টাকা, পটোল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় কম।
লাউ আকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এ ছাড়া মাঝারি আকারের ফুল কপি ৬০ টাকা ও আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।
শুক্রাবাদ মসজিদের পাশের বাজারে সবজি বিক্রেতা জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘সবজির দাম নির্ভর করে বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির সরবরাহের ওপর। এখন শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ছে। তাই আগের সপ্তাহের চেয়ে কম দামে বিক্রি করছি।
এদিকে মাংসের বাজারে বলা চলে আগের সপ্তাহের দামই অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি দরে। তবে কিছু দোকানি সুযোগ বুঝে দাম বেশিও নিচ্ছেন। সোনালি মুরগি ২৭৫ থেকে ২৯০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৪০ থেকে ৪৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। মুরগির লাল ডিম ডজনে কমেছে ১০ টাকা করে। ১৩০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া মুরগির সাদা ডিম ১২৫ টাকা, হাঁসের ডিম ২২০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
জেএন/পিআর