নিজেদের তৈরি দূরপাল্লার পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৫ এর সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার উপকূলবর্তী আবদুল কালাম দ্বীপে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়। ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচলের ভারত-চীন সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়ার দুই দিনের মাথায় অগ্নি-৫ এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করলো দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী।
অবশ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এনডিটিভিকে বলেন, অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের সময়সূচি অনেক আগেই নির্ধারণ করা ছিল। এর সঙ্গে অরুণাচলের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের কোনো সম্পর্ক নেই।
জানা গেছে, ২০১২ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শুরু করে ভারত। অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর তৈরি নবম ক্ষেপণাস্ত্র।
ক্ষেপণাস্ত্রটি ৫ হাজার ৪০০ কিলোমিটার (৩ হাজার ৩০০ মাইল) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। সে হিসাবে এটি চীনের মূল ভূখণ্ডেও আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে।
৯ ডিসেম্বর ভারতের অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কাছে ভারত ও চীনের সীমান্তরক্ষী ও সেনাসদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে উভয় পক্ষের কয়েকজন সেনা সদস্যের মৃত্যুও ঘটেছে। তবে দুই দেশের সংবাদমাধ্যমে এ খবর এসেছে ১২ ডিসেম্বর।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ভারত-চীন সীমান্তের পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে।
ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের সঙ্গেও সীমান্ত আছে চীনের। গত মাসে এ রাজ্যে ভারত ও মার্কিন বাহিনীর যৌথ সামরিক মহড়া অরুণাচলে সাম্প্রতিক সংঘাতের মূল কারণ হতে পারে।
অরুণাচল নিয়ে ভারত-চীনের মধ্যে বেশ কয়েক দশক ধরেই দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এ দ্বন্দ্বের প্রধান কারণ হলো, অরুণাচলকে চীন বরাবরই নিজেদের স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ তিব্বতের অংশ মনে করে। ১৯৬২ সালে এ ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধও হয়েছে।
জেএন/এমআর